স্টাফ রিপোর্টার॥ আমন ধান কাটাকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন রংপুরের কামাররা। লোহা ও হাতুড়ির টুংটাং শব্দে মুখরিত হয়ে উঠেছে রংপুরের সব উপজেলার সব হাট-বাজারের কামারশালাগুলো। ধান কাটার জন্য কাস্তে, ধান মাড়াইয়ের ফাল এবং ধান কাটা শেষে প্রয়োজন হবে কোদাল। এসব তৈরি ও মেরামতে এখন ব্যস্ত কামারেরা। প্রতি বছর এ সময়টায় কৃষকরা তাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী মেরামত ও নতুন করে বানানোর জন্য ভিড় করেন কামারশালাগুলোতে। রংপুরের বেশ কিছু কামারশালা ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। রংপুর নগরীর আশরতপুরের সুকুমার চন্দ্র কর্মকার কামার অনেক সহযোগীদের নিয়ে দেদার কাজ করছেন। তাদের কারও কথা বলার ফুরসতও নেই। হাঁপর দিয়ে কয়লা আগুনের বাতাসে টকটকে লাল লোহা পিটিয়ে কাস্তে, ধান মারাইয়ের ফাল আর কোদাল বানানোর কাজ করছিলেন তারা। কাজের ফাঁকে ফাঁকে সুকুমার চন্দ্র কর্মকার কামার বলেন, ধান কাটার সময় হওয়ায় এখন কাস্তে বানানো ও মেরামত কাজই বেশি। ধান মাড়াইয়ের ফালও বানাচ্ছে অনেকে। আবার অনেক কৃষক আগেই কোদাল বানিয়েছেন, এখন শুধু শান দিয়ে নিচ্ছেন। অন্য এক এলাকার হামজা কামার বলেন, এখন কয়লা পাওয়া যায় কম। তাই কাজ করতে খুব কষ্ট। তাও মানুষের চাহিদা মেটাতে চেষ্টা করছি। বর্তমানে আমাদের কাজ খুব বেশি। রাতদিন পরিশ্রম করছি। টাকা-পয়সা না থাকায় গ্যাসের চুলা নেই। তাই কয়লা পুড়েই কাজ করছি। কামারশালায় আসা কৃষক সাইফুল ইসলাম জানান, আমাদের এখন ধান কাটার সময় হয়েছে। ধান কাটার জন্য কাস্তের খুব দরকার। তাই ৩-৪ টি কাস্তে বানাতে সকাল থেকে এসে বসে আছি। সিরিয়ালই পাচ্ছি না।
আরেক কৃষক মালেক মিয়া জানান, ধান মাড়াইয়ের ফাল বানানো ও কোদাল শান দেওয়ার জন্য কামারশালায় এসেছেন। কামারশালায় একটি নতুন কাস্তে তৈরির জন্য কামাররা ১০০ থেকে ১৫০ টাকা নেন। পুরনো কাস্তে মেরামত করতে ৫০ থেকে ৮০ টাকা। আর নতুন একটি কোদাল তৈরি করতে নেন ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। ফাল বানাতে খরচ পড়ে প্রায় ২০০ টাকা।