1:37 pm, Thursday, 21 November 2024

যে কারণে ভেঙে যায় বিয়ে

  • Reporter Name
  • Update Time : 06:29:24 am, Wednesday, 23 October 2024
  • 7 Time View

সাদুল্লাপুর (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি॥ নিভৃত গ্রামাঞ্চল। চারপাশে সবুজের অরণ্য। মাঝখানে মরা নদীর দ্বীপ। সেখানে বাস করেন একাধিক পরিবার। পাশে থৈথৈ পানি। নেই যোগাযোগ ব্যবস্থা। চলাচলে একমাত্র ভরসা ড্রামের ভেলা। ঝুঁকি নিয়ে পারাপার। একইসঙ্গে নেই রাস্তাও। চলতে হয় কৃষি জমির আইল দিয়ে। সবমিলে ভোগান্তির শেষ নেই দ্বীপচরের মানুষদের। এ পরিস্থিতে দ্বীপের সন্তানদের সঙ্গে বিয়ে করাতে নারাজ অনেকে। ফলে ছেলে-মেয়েদের বিয়ে দিতে অনেকটা বেগ পেতে হয় বলে জানালেন এখানকার বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম।

 সম্প্রতি সরেজমিনে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের জয়েনপুর-পুরান লক্ষীপুর এলাকায় দেখা গেছে- অদ্ভুদ এক ভোগান্তির চিত্র। এখানকার মরা নদীর বকশীরদহর পানির ওপর দিয়ে ড্রামের ভেলায় ঝুঁকি নিয়েঁ পারাপার হচ্ছেন- বেশ কিছু নারী-পুরুষ। এমন দুর্ভোগই নিত্যসঙ্গী বলে ভুক্তভোগিদের অভিযোগ। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বনগ্রাম ইউনিয়নের জয়েনপুর ঘেসে একটি গ্রামের নাম- পুরান লক্ষীপুর। একসময় এর পাশ দিয়ে বয়েছিল ঘাঘট নদী। ইতিপূর্বে এই নদীর গতিপথ পরিবর্তন হওয়ায় সৃষ্টি হয় মরা নদীতে। এখন এটি বকশীর দহ নামে অনেকে চেনেন এবং জানেন। বকশীর দহ ওপার ঘেসে দ্বীপে বসবাস করেন বেশ কিছু পরিবার। তারা যুগযুগ ধরে বসবাস করে আসলেও তাদের নেই রাস্তাঘাট। সেইসঙ্গে বকশীর দহর পানির ওপর দিয়ে চলাচলা ছাড়াই নেই কোন বিকল্প রাস্তা। নিত্যদিন ড্রামের ভেলা দিয়ে চলতে হয় বিভিন্ন স্থানে। এই ভেলায় ওপারে পৌঁছিয়ে হেঁটে যেতে হয় জমির আইল দিয়ে। এতে করে চরম দুভোর্গের শিকার হচ্ছে শত শত মানুষ। 

রবিউল ইসলাম নামের এক ভুক্তভোগি জানান- শুধু সেতুও নয়, নেই রাস্তাঘাট। ভেলায় ওপারে পৌঁছিয়ে অন্যের জমির আইল দিয়ে খানিকটা হেঁটে গিয়ে মূল সড়কে ওঠতে হয়। এ পাশে সেতুসহ একটি রাস্তা নির্মাণের দাবি করেন তিনি।

স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ অন্যান্য প্রয়োজনী তাগিতে যাওয়ার জন্য ড্রামের ভেলাই ভরসা। একটি সেতু ও রাস্তার জন্য দীর্ঘযুগের ভোগান্তি। জনপ্রতিনিধিদের জানিয়ে কোন সুফল পায়নি। এমন পরিস্থিতে থাকায় এই দ্বীপের ছেলে-মেয়েদে বিয়ে করাতে অনেকটা বেগ পেতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে ঠিকঠাক হওয়া বিয়ে ভেঙে যায়। এমনটি জানালেন- সুমন মিয়ার নামের এক বাসিন্দা।

কথা হয় বাবলু মিয়া নামের আরেক বাসিন্দার সঙ্গে। তিনি বলেন, বর্ষা মৌসুমে খাল পারপারে নিজেদের টাকায় বানানো হয় বাঁশের সাঁকো বা ড্রামের ভেলা। এতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয়। এই বকশীর দহর ওপর সেতু নির্মাণের দাবি জানানো হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। স্থানীয় ব্যক্তি জাহিদুল ইসলাম জাহিদ বলেন, বকশীর দহর ওপারে শতাধিক হেক্টর কৃষি জমি রয়েছে। সেখানে শাক-সবজি-ধানসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদন হয়ে থাকে। ওইসব ফসলগুলো এপারে নিয়ে আসা খুবই কষ্টসার্ধ্য। এতে করে কখনও কখনও উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এই বকশীর দহর ওপস সেতু নিমাণ জরুরি। এ বিষয়ে কথা হয় বনগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ফজলুল কাইয়ুম হুদার সঙ্গে। তিনি বলেন- ওইস্থানে রাস্তা তৈরীসহ সেতু নির্মাণের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

মমতাজ শিরীন ভরসার শোক প্রকাশ

যে কারণে ভেঙে যায় বিয়ে

Update Time : 06:29:24 am, Wednesday, 23 October 2024

সাদুল্লাপুর (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি॥ নিভৃত গ্রামাঞ্চল। চারপাশে সবুজের অরণ্য। মাঝখানে মরা নদীর দ্বীপ। সেখানে বাস করেন একাধিক পরিবার। পাশে থৈথৈ পানি। নেই যোগাযোগ ব্যবস্থা। চলাচলে একমাত্র ভরসা ড্রামের ভেলা। ঝুঁকি নিয়ে পারাপার। একইসঙ্গে নেই রাস্তাও। চলতে হয় কৃষি জমির আইল দিয়ে। সবমিলে ভোগান্তির শেষ নেই দ্বীপচরের মানুষদের। এ পরিস্থিতে দ্বীপের সন্তানদের সঙ্গে বিয়ে করাতে নারাজ অনেকে। ফলে ছেলে-মেয়েদের বিয়ে দিতে অনেকটা বেগ পেতে হয় বলে জানালেন এখানকার বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম।

 সম্প্রতি সরেজমিনে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের জয়েনপুর-পুরান লক্ষীপুর এলাকায় দেখা গেছে- অদ্ভুদ এক ভোগান্তির চিত্র। এখানকার মরা নদীর বকশীরদহর পানির ওপর দিয়ে ড্রামের ভেলায় ঝুঁকি নিয়েঁ পারাপার হচ্ছেন- বেশ কিছু নারী-পুরুষ। এমন দুর্ভোগই নিত্যসঙ্গী বলে ভুক্তভোগিদের অভিযোগ। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বনগ্রাম ইউনিয়নের জয়েনপুর ঘেসে একটি গ্রামের নাম- পুরান লক্ষীপুর। একসময় এর পাশ দিয়ে বয়েছিল ঘাঘট নদী। ইতিপূর্বে এই নদীর গতিপথ পরিবর্তন হওয়ায় সৃষ্টি হয় মরা নদীতে। এখন এটি বকশীর দহ নামে অনেকে চেনেন এবং জানেন। বকশীর দহ ওপার ঘেসে দ্বীপে বসবাস করেন বেশ কিছু পরিবার। তারা যুগযুগ ধরে বসবাস করে আসলেও তাদের নেই রাস্তাঘাট। সেইসঙ্গে বকশীর দহর পানির ওপর দিয়ে চলাচলা ছাড়াই নেই কোন বিকল্প রাস্তা। নিত্যদিন ড্রামের ভেলা দিয়ে চলতে হয় বিভিন্ন স্থানে। এই ভেলায় ওপারে পৌঁছিয়ে হেঁটে যেতে হয় জমির আইল দিয়ে। এতে করে চরম দুভোর্গের শিকার হচ্ছে শত শত মানুষ। 

রবিউল ইসলাম নামের এক ভুক্তভোগি জানান- শুধু সেতুও নয়, নেই রাস্তাঘাট। ভেলায় ওপারে পৌঁছিয়ে অন্যের জমির আইল দিয়ে খানিকটা হেঁটে গিয়ে মূল সড়কে ওঠতে হয়। এ পাশে সেতুসহ একটি রাস্তা নির্মাণের দাবি করেন তিনি।

স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ অন্যান্য প্রয়োজনী তাগিতে যাওয়ার জন্য ড্রামের ভেলাই ভরসা। একটি সেতু ও রাস্তার জন্য দীর্ঘযুগের ভোগান্তি। জনপ্রতিনিধিদের জানিয়ে কোন সুফল পায়নি। এমন পরিস্থিতে থাকায় এই দ্বীপের ছেলে-মেয়েদে বিয়ে করাতে অনেকটা বেগ পেতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে ঠিকঠাক হওয়া বিয়ে ভেঙে যায়। এমনটি জানালেন- সুমন মিয়ার নামের এক বাসিন্দা।

কথা হয় বাবলু মিয়া নামের আরেক বাসিন্দার সঙ্গে। তিনি বলেন, বর্ষা মৌসুমে খাল পারপারে নিজেদের টাকায় বানানো হয় বাঁশের সাঁকো বা ড্রামের ভেলা। এতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয়। এই বকশীর দহর ওপর সেতু নির্মাণের দাবি জানানো হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। স্থানীয় ব্যক্তি জাহিদুল ইসলাম জাহিদ বলেন, বকশীর দহর ওপারে শতাধিক হেক্টর কৃষি জমি রয়েছে। সেখানে শাক-সবজি-ধানসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদন হয়ে থাকে। ওইসব ফসলগুলো এপারে নিয়ে আসা খুবই কষ্টসার্ধ্য। এতে করে কখনও কখনও উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এই বকশীর দহর ওপস সেতু নিমাণ জরুরি। এ বিষয়ে কথা হয় বনগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ফজলুল কাইয়ুম হুদার সঙ্গে। তিনি বলেন- ওইস্থানে রাস্তা তৈরীসহ সেতু নির্মাণের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।