3:40 pm, Saturday, 23 November 2024

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপে নির্বাচন, সংস্কারে মতামত তুলে ধরেছে জামায়াত

  • Reporter Name
  • Update Time : 07:05:28 am, Sunday, 6 October 2024
  • 10 Time View

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, গত তিন জাতীয় নির্বাচনে জাঁতি যা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এই সরকারের কাজ হচ্ছে একটা গ্রহণযোগ্য, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দেওয়ার পরিবেশ তৈরি করা। এজন্য কিছু মৌলিক বিষয়ে তাদের সংস্কার করতেই হবে। গতকাল শনিবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সংলাপে নির্বাচন, সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয়ে মতামত তুলে ধরেছেন জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধিরা। সংলাপ শেষে বিকাল ৪টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন জামায়াত আমির। সংস্কারকে এক নম্বরে গুরুত্ব দিচ্ছেন জানিয়ে তিনি বলেন, সংস্কারের টাইমলাইন কী হবে, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা দুটি বিষয় দেশবাসীর কাছে চেয়েছি এবং সরকারের কাছে জানিয়েছি। একটা রোডম্যাপ হবে সংস্কারের, আরেকটা নির্বাচনের। সংস্কার সফল হলে নির্বাচন সফল হবে। দুটি বিষয়ে আমরা গুরুত্ব দিয়েছি। পরপর তিনটি জাতীয় নির্বাচনে জাঁতি বঞ্চিত হয়েছে উল্লেখ করে জামায়াতের আমির বলেন, এই সরকার দেশ শাসনের জন্য আসেনি, তারা দেশ শাসনের সুষ্ঠু পথ বিনির্মাণের জন্য এসেছে। তাদের কাজ হচ্ছে, গত তিন জাতীয় নির্বাচনে জাঁতি যা থেকে বঞ্চিত হয়েছে, একটা গ্রহণযোগ্য, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দেওয়ার পরিবেশ তৈরি করা। এজন্য কিছু মৌলিক বিষয়ে তাদের সংস্কার করতেই হবে। কী কী মৌলিক বিষয়ে তারা সংস্কার করবে, আমরা সেই বিষয়ে কথা বলেছি। গণমাধ্যমকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আগামী ৯ অক্টোবর আপনাদের মাধ্যমে আমাদের প্রস্তাবগুলো জাতির সামনে উন্মুক্ত করবো। আমরা আমাদের চিন্তা জাতির সামনে তুলে ধরবো, কী কী সংস্কার এই মুহূর্তে প্রয়োজন, কী কী সংস্কার পরবর্তী পর্যায়ে আমাদের লাগবে। এর আগে জামায়াতে ইসলামীর ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপ করেন। জামায়াতের আমির শফিকুর রহমানের নেত্বত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলটির নায়েবে আমির আবু তাহের মুহাম্মদ আবদুল্লাহ, এম এম শামসুল ইসলাম, মজিবুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এরপর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার দুই দফা সংলাপ হয়, এটি তৃতীয় দফা সংলাপ। এদিন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিকাল গণতন্ত্র মঞ্চ এবং বাম গণতান্ত্রিক জোট, হেফাজতে ইসলাম, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ, এবি (আমার বাংলাদেশ) পার্টির সংলাপ হয়। দেশের আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে কথা হয়েছে জানিয়ে শফিকুর রহমান বলেন, জনগণ এবং সরকার একসঙ্গে কীভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও উন্নত করতে পারে। সব ধরনের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে পারে, সেই বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের কথাবার্তা হয়েছে। আমরা আশা করছি, বর্তমান যে সরকার আছে, তারা কোনো ধরনের পক্ষ-বিপক্ষের মানসিকতা না নিয়ে, নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে তারা দেশকে একটা ভালো পর্যায়ে নিয়ে নির্বাচন দিতে সক্ষম হবে। তিনি বলেন, আমরা শুরু থেকে বলে আসছিলাম সংস্কারের জন্য সরকারকে যৌক্তিক সময় দিতে চাই। সেই যৌক্তিক সময়টা কী হবে? এটা নিয়ে অচীরেই আমরা কাজ করবো। এটা দেরি হবে না। আমরা সামনে আগাতে চাই। জামায়াত আমির বলেন, দুর্গাপূজার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখার জন্য করণীয় কী, এমন একটি প্রশ্ন এসেছিল। আমরা এই বিষয়ে আলোচনা করেছি। জনগণের সঙ্গে সরকারের পার্টনারশিপ লাগবে। জনগণের সম্পৃক্ততা প্রয়োজন হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জনগণ যদি একসঙ্গে কাজ করে, একটা অভূতপূর্ব দুর্গাপূজা হিন্দু ধর্মের ভাই-বোনরা উদযাপন করতে পারবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপে নির্বাচন, সংস্কারে মতামত তুলে ধরেছে জামায়াত

Update Time : 07:05:28 am, Sunday, 6 October 2024

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, গত তিন জাতীয় নির্বাচনে জাঁতি যা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এই সরকারের কাজ হচ্ছে একটা গ্রহণযোগ্য, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দেওয়ার পরিবেশ তৈরি করা। এজন্য কিছু মৌলিক বিষয়ে তাদের সংস্কার করতেই হবে। গতকাল শনিবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সংলাপে নির্বাচন, সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয়ে মতামত তুলে ধরেছেন জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধিরা। সংলাপ শেষে বিকাল ৪টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন জামায়াত আমির। সংস্কারকে এক নম্বরে গুরুত্ব দিচ্ছেন জানিয়ে তিনি বলেন, সংস্কারের টাইমলাইন কী হবে, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা দুটি বিষয় দেশবাসীর কাছে চেয়েছি এবং সরকারের কাছে জানিয়েছি। একটা রোডম্যাপ হবে সংস্কারের, আরেকটা নির্বাচনের। সংস্কার সফল হলে নির্বাচন সফল হবে। দুটি বিষয়ে আমরা গুরুত্ব দিয়েছি। পরপর তিনটি জাতীয় নির্বাচনে জাঁতি বঞ্চিত হয়েছে উল্লেখ করে জামায়াতের আমির বলেন, এই সরকার দেশ শাসনের জন্য আসেনি, তারা দেশ শাসনের সুষ্ঠু পথ বিনির্মাণের জন্য এসেছে। তাদের কাজ হচ্ছে, গত তিন জাতীয় নির্বাচনে জাঁতি যা থেকে বঞ্চিত হয়েছে, একটা গ্রহণযোগ্য, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দেওয়ার পরিবেশ তৈরি করা। এজন্য কিছু মৌলিক বিষয়ে তাদের সংস্কার করতেই হবে। কী কী মৌলিক বিষয়ে তারা সংস্কার করবে, আমরা সেই বিষয়ে কথা বলেছি। গণমাধ্যমকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আগামী ৯ অক্টোবর আপনাদের মাধ্যমে আমাদের প্রস্তাবগুলো জাতির সামনে উন্মুক্ত করবো। আমরা আমাদের চিন্তা জাতির সামনে তুলে ধরবো, কী কী সংস্কার এই মুহূর্তে প্রয়োজন, কী কী সংস্কার পরবর্তী পর্যায়ে আমাদের লাগবে। এর আগে জামায়াতে ইসলামীর ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপ করেন। জামায়াতের আমির শফিকুর রহমানের নেত্বত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলটির নায়েবে আমির আবু তাহের মুহাম্মদ আবদুল্লাহ, এম এম শামসুল ইসলাম, মজিবুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এরপর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার দুই দফা সংলাপ হয়, এটি তৃতীয় দফা সংলাপ। এদিন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিকাল গণতন্ত্র মঞ্চ এবং বাম গণতান্ত্রিক জোট, হেফাজতে ইসলাম, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ, এবি (আমার বাংলাদেশ) পার্টির সংলাপ হয়। দেশের আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে কথা হয়েছে জানিয়ে শফিকুর রহমান বলেন, জনগণ এবং সরকার একসঙ্গে কীভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও উন্নত করতে পারে। সব ধরনের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে পারে, সেই বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের কথাবার্তা হয়েছে। আমরা আশা করছি, বর্তমান যে সরকার আছে, তারা কোনো ধরনের পক্ষ-বিপক্ষের মানসিকতা না নিয়ে, নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে তারা দেশকে একটা ভালো পর্যায়ে নিয়ে নির্বাচন দিতে সক্ষম হবে। তিনি বলেন, আমরা শুরু থেকে বলে আসছিলাম সংস্কারের জন্য সরকারকে যৌক্তিক সময় দিতে চাই। সেই যৌক্তিক সময়টা কী হবে? এটা নিয়ে অচীরেই আমরা কাজ করবো। এটা দেরি হবে না। আমরা সামনে আগাতে চাই। জামায়াত আমির বলেন, দুর্গাপূজার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখার জন্য করণীয় কী, এমন একটি প্রশ্ন এসেছিল। আমরা এই বিষয়ে আলোচনা করেছি। জনগণের সঙ্গে সরকারের পার্টনারশিপ লাগবে। জনগণের সম্পৃক্ততা প্রয়োজন হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জনগণ যদি একসঙ্গে কাজ করে, একটা অভূতপূর্ব দুর্গাপূজা হিন্দু ধর্মের ভাই-বোনরা উদযাপন করতে পারবে।