স্টাফ রিপোর্টার॥ কাস্তেচরা পাখি অপূর্ব সৌন্দর্য বহন করছে। কাস্তেচরা পাখি দুর্লভ হয়ে উঠেছে। সহজে এর দেখা মেলা ভার। এদের ডাক সাধারণত চুপচাপ কিন্তু প্রজনন ঋতুর সময় মৃদুস্বরে অনেকটা গাধা বা ছাগলের ডাকের মতন ডাকতে থাকে। এটিই হল এই পখির অন্যতম বৈশিষ্ট।
কাস্তেচরা এই পাখির্টি সম্পর্কে জানাগেছে, খয়রা কাস্তেচরা বা দ্যুতি দোচারা পাখির দৈর্ঘ্য সাধারণত ৪৮ থেকে ৬৬ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। এদের ডানার পরিমাপ ৮০ থেকে ১০৫ সেন্টিমিটার লম্বা হতে পারে। এদের লেজের দৈর্ঘ্য ৯ থেকে ১১ সেন্টিমিটার এবং দেহের ওজন ৪৮৫ থেকে ৯৭০ গ্রাম পর্যন্ত হয়।এদের আকার অনেকটা গৃহপালিত মুরগি মতো দেখতে। বৈশিষ্ট্য হল অন্যান্য কাস্তেচরা বকেদের তুলনায় আকারে ছোট। এদের মাথায় পালক থাকে এবং নিচের দিকে বাঁকানো সরু ঠোঁট। প্রজনন ঋতুতে দেহের উপরের অংশ গাঢ় বাদামী রঙের এবং দেহের নিম্ন অংশ ও ডানা উজ্জ্বল সবুজ রঙের মত দেখায়। এদের ডাক সাধারণত চুপচাপ। তবে প্রজনন ঋতুর সময় মৃদুস্বরে অনেকটা গাধা বা ছাগলের ডাকের মতন ডাকতে থাকে। এদের বিচরণ ক্ষেত্র খাল, বিল, হ্রদ, নদী, খাঁড়ি ও লবণাক্ত জলাভূমি। এছাড়াও প্লাবন অঞ্চল, নিকাশী পুকুর, ধান ক্ষেত, জলপূর্ন চাষের জমি, অগভীর হ্রদ, কর্দমাক্ত জলাভূমিতে এদের দেখা পাওয়া যায। এরা এরা মাংসাশী তাই এরা কীটপতঙ্গ এবং শূককীট খেয়ে জীবন ধারন করে। এদের খাদ্য তালিকায় রয়েছে জলজ গুবরে পোকা, ফড়িং, ডাঁশ, ঘাসফড়িং, ঝিঁঝিঁপোকা, মাছি, ক্যাডিসফ্লাই, জোঁক, শামুক, কাঁকড়া, চিংড়ি ইত্যাদি। বেশিরভাগ সময় মার্চ থেকে অক্টোবরের মধ্যে এবং বর্ষার আগে প্রজজন করে তবে এরা নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে বসন্তকালে বংশবৃদ্ধি করে। গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলে বর্ষাকালে প্রজজন করে থাকে। এরা মাটি থেকে ৬-১২ মিটার উচ্চতায় গাছপালা, নিচু গাছ বা ঝোপের মধ্যে বাসা তৈরি করে বংশবৃদ্ধি করে । এরা একবারে ৩ থেকে ৪টি নীলাভ সবুজ ডিম পাড়ে। মা-বাবা দুইজন মিলে ৩০ থেকে ৩৩ দিনের মধ্যে ডিম ফোটান। বাচ্চারা ৭ থেকে ৮ সপ্তাহের মধ্যে আকাশে উড়তে পারে।
সম্প্রতি কাস্তেচরা পাখির ছবি তুলেছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ব বিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও সৌখিন আলোকচিত্রী ড. তুহিন ওয়াদুদ। তিনি বলেন, কাস্তেজরার বাংলাদেশে প্রজননের খবর সম্ভবত এবারই প্রথম। বাংলাদেশে এ পাখির প্রজনন পাখিপ্রেমীদের জন্য অনন্য খবর। এ পাখির ছবি তুলতে যাওয়ার দ্বিতীয় দিন ১২ বার পরিবহন পরিবর্তন করতে হয়েছে। তবুও যাত্রা ছিল ক্লান্তি হীন। তবে ছবি তোলার পরে সব ক্লান্তি দূল হয়ে গেছে।