6:19 am, Sunday, 24 November 2024

গাজা যুদ্ধ গড়াল ১২তম মাসে, যুদ্ধবিরতি নিয়ে নেই আশার খবর

  • Reporter Name
  • Update Time : 02:09:28 pm, Saturday, 7 September 2024
  • 7 Time View

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলা ১২তম মাসে গড়াল। কিন্তু এখনো এই যুদ্ধ থামার কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে না। আজ শনিবার পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অবরুদ্ধ উপত্যকাটির প্রায় ৪১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। উদ্বাস্তু হয়েছেন গাজার প্রায় সব বাসিন্দা। পুরো উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

এখনো প্রতিদিনই গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এদিকে পোলিও টিকাদান কর্মসূচি চলাকালে গাজায় স্কুলে আশ্রয়শিবিরের ইসরায়েলি হামলায় ১৩ জন নিহত হয়েছেন। কোথাও কোথাও দুই পক্ষের মধ্যে লড়াইয়ের খবরও পাওয়া যাচ্ছে।

তবে মধ্যস্থতাকারীদের বিরামহীন চেষ্টার পরও নতুন করে যুদ্ধবিরতির কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। কারণ, যুদ্ধবিরতি নিয়ে দুই পক্ষই নিজেদের শর্তে অনড়। ফলে প্রায় এক বছর ধরে চলা এই হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ কবে থামবে, তা অনিশ্চিত।

গত বছরের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে নজিরবিহীন এক হামলা চালায় গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাস। সেদিন থেকে গাজায় পাল্টা নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, ইসরায়েলি হামলায় গতকাল নতুন করে আরও ৬১ জন নিহতের তথ্য পাওয়া গেছে। এ নিয়ে মোট নিহত বেড়ে হয়েছে ৪০ হাজার ৯৩৯। আহত নয়তো পঙ্গু হয়েছেন প্রায় ৯৫ হাজার ফিলিস্তিনি।

যুদ্ধ ১২তম মাসে গড়ানো নিয়ে গতকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার প্রধান ফিলিপ্পি লাজ্জারনি লিখেছেন, ‘১১ মাস। যথেষ্ট হয়েছে। এটা আর কেউ নিতে পারছে না। মানবতাকে অবশ্যই সমুন্নত রাখতে হবে। এখনই এই যুদ্ধ বন্ধ করুন।’

যুদ্ধবিরতির আশা ক্ষীণ

গাজায় চলমান হত্যাযজ্ঞ বন্ধে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা আহ্বান জানালেও আপাতত যুদ্ধবিরতির কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর পক্ষ থেকে অবশ্য দুই পক্ষকেই যুদ্ধবিরতির বিষয়ে রাজি করার বিষয়ে আলোচনা চলছে। কিন্তু নিজেদের শর্তে দুই পক্ষই অনড় অবস্থানে বলে জানা গেছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন গত বৃহস্পতিবার জানান, যুদ্ধবিরতির ‘৯০ শতাংশ শর্ত নিয়ে দুই পক্ষই ঐকমত্যে পৌঁছেছে’। যুদ্ধবিরতির চুক্তি চূড়ান্ত করতে ইসরায়েল ও হামাসকে এদিন আহ্বান জানান তিনি।

তবে যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে ঐকমত্য নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উল্টো কথা বলেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে তিনি শুক্রবার বলেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে ঐকমত্য হয়নি।

হামাসের শর্ত, ইসরায়েলি সব সেনাকে গাজা থেকে প্রত্যাহার করে নিলেই কেবল তারা যুদ্ধবিরতির বিষয়ে রাজি হবে। তবে এতে আপত্তি ইসরায়েলের। নেতানিয়াহু সরকার চায়, যুদ্ধবিরতি হলেও ইসরায়েলি সেনারা গাজার বিভিন্ন এলাকায় মোতায়েন থাকবেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

স্বৈরাচারের সময় ৬০ লাখ নেতাকর্মীর নামে গায়েবি মামলা হয়েছে: তারেক রহমান

গাজা যুদ্ধ গড়াল ১২তম মাসে, যুদ্ধবিরতি নিয়ে নেই আশার খবর

Update Time : 02:09:28 pm, Saturday, 7 September 2024

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলা ১২তম মাসে গড়াল। কিন্তু এখনো এই যুদ্ধ থামার কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে না। আজ শনিবার পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অবরুদ্ধ উপত্যকাটির প্রায় ৪১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। উদ্বাস্তু হয়েছেন গাজার প্রায় সব বাসিন্দা। পুরো উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

এখনো প্রতিদিনই গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এদিকে পোলিও টিকাদান কর্মসূচি চলাকালে গাজায় স্কুলে আশ্রয়শিবিরের ইসরায়েলি হামলায় ১৩ জন নিহত হয়েছেন। কোথাও কোথাও দুই পক্ষের মধ্যে লড়াইয়ের খবরও পাওয়া যাচ্ছে।

তবে মধ্যস্থতাকারীদের বিরামহীন চেষ্টার পরও নতুন করে যুদ্ধবিরতির কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। কারণ, যুদ্ধবিরতি নিয়ে দুই পক্ষই নিজেদের শর্তে অনড়। ফলে প্রায় এক বছর ধরে চলা এই হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ কবে থামবে, তা অনিশ্চিত।

গত বছরের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে নজিরবিহীন এক হামলা চালায় গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাস। সেদিন থেকে গাজায় পাল্টা নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, ইসরায়েলি হামলায় গতকাল নতুন করে আরও ৬১ জন নিহতের তথ্য পাওয়া গেছে। এ নিয়ে মোট নিহত বেড়ে হয়েছে ৪০ হাজার ৯৩৯। আহত নয়তো পঙ্গু হয়েছেন প্রায় ৯৫ হাজার ফিলিস্তিনি।

যুদ্ধ ১২তম মাসে গড়ানো নিয়ে গতকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার প্রধান ফিলিপ্পি লাজ্জারনি লিখেছেন, ‘১১ মাস। যথেষ্ট হয়েছে। এটা আর কেউ নিতে পারছে না। মানবতাকে অবশ্যই সমুন্নত রাখতে হবে। এখনই এই যুদ্ধ বন্ধ করুন।’

যুদ্ধবিরতির আশা ক্ষীণ

গাজায় চলমান হত্যাযজ্ঞ বন্ধে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা আহ্বান জানালেও আপাতত যুদ্ধবিরতির কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর পক্ষ থেকে অবশ্য দুই পক্ষকেই যুদ্ধবিরতির বিষয়ে রাজি করার বিষয়ে আলোচনা চলছে। কিন্তু নিজেদের শর্তে দুই পক্ষই অনড় অবস্থানে বলে জানা গেছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন গত বৃহস্পতিবার জানান, যুদ্ধবিরতির ‘৯০ শতাংশ শর্ত নিয়ে দুই পক্ষই ঐকমত্যে পৌঁছেছে’। যুদ্ধবিরতির চুক্তি চূড়ান্ত করতে ইসরায়েল ও হামাসকে এদিন আহ্বান জানান তিনি।

তবে যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে ঐকমত্য নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উল্টো কথা বলেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে তিনি শুক্রবার বলেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে ঐকমত্য হয়নি।

হামাসের শর্ত, ইসরায়েলি সব সেনাকে গাজা থেকে প্রত্যাহার করে নিলেই কেবল তারা যুদ্ধবিরতির বিষয়ে রাজি হবে। তবে এতে আপত্তি ইসরায়েলের। নেতানিয়াহু সরকার চায়, যুদ্ধবিরতি হলেও ইসরায়েলি সেনারা গাজার বিভিন্ন এলাকায় মোতায়েন থাকবেন।