সিলেটের হজরত শাহপরান (রহ.)-এর মাজারে গানবাজনা নিষিদ্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তায় মাজারের খাদেম সৈয়দ কাবুল আহমদ এ ঘোষণা দেন।
এর আগে গতকাল জুমার নামাজের পর ‘অসামাজিক ও অনৈতিক’ কার্যকলাপ বন্ধের দাবিতে মাজারের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন একদল মুসল্লি। তাঁদের দাবি, গানবাজনার আড়ালে মাজারে মাদক সেবন ও অশ্লীলতা হয়। এসব অসামাজিক ও অনৈতিক কার্যকলাপ দ্রুত বন্ধ করতে হবে। পরে বিকেলে এক ভিডিও বার্তায় গানবাজনা বন্ধের ঘোষণা দেন মাজারের খাদেম।
ভিডিওতে খাদেম সৈয়দ কাবুল আহমদ বলেন, মাজারে গানবাজনা সম্পূর্ণ বন্ধ ঘোষণা করা হলো। ওরসে (প্রতিবছর রবিউল আউয়াল মাসের ৪ থেকে ৬ তারিখ) কোনো গানবাজনা হবে না। মাজারে ঢোল-তবলা কিংবা অন্য কোনো বাদ্যযন্ত্র না নিয়ে আসার অনুরোধও জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘মাজারে প্রতি বৃহস্পতিবার যে গানবাজনার আয়োজন করা হয়, তা-ও এখন থেকে বন্ধ থাকবে। কেউ এমন আয়োজন করার চেষ্টা করলে প্রতিহত করা হবে।’
আজ শনিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে মাজারের খাদেম সৈয়দ কাবুল আহমদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগে যেভাবে ভাবগাম্ভীর্য নিয়ে মানুষ আসতেন, এখন সেটা নেই; এখন অশ্লীলতা ঢুকে গেছে। এখন গানবাজনার আড়ালে ইয়াবার ব্যবসা, গাঁজার ব্যবসা, নাচ ইত্যাদি ঢুকে গেছে। এ কারণেই এখানে গানবাজনা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।’
শুক্রবার জুমার নামাজের পর ‘অসামাজিক ও অনৈতিক’ কার্যকলাপ বন্ধের দাবিতে মাজারের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন একদল মুসল্লিছবি: ভিডিও থেকে সংগৃহীত
কাবুল আহমদ জানান, কারও চাপে পড়ে গানবাজনা বন্ধ করা হয়নি। আলেম-ওলামা, ছাত্র-জনতা, খাদেম পরিবার, এলাকাবাসী, সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ও স্থানীয় প্রশাসন সবাই মিলেই আলোচনার মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, মাজারের খাদেমরা শুরু থেকেই মাজারে গানবাজনা, নাচ, মাদক সেবনের মতো গর্হিত কর্মকাণ্ডের বিপক্ষে ছিলেন। অসামাজিক কোনো কর্মকাণ্ড মাজারে হতে দেওয়া হবে না। তবে মাজারের ওরস নির্ধারিত সময়ে নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী আয়োজন করা হবে। মাজার জিয়ারতে যে কেউই আসতে পারবেন। এতে কোনো বাধা নেই।
দেলোয়ার হোসেন আরও বলেন, গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় লোকজন, মাজারের খাদেমসহ সব মহলের সঙ্গে বৈঠক হয়। এতে মাজারে যাতে কোনো অনৈতিক কর্মকাণ্ড না হয়, এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। কোনো ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ড হলে সেটি প্রতিহত করারও সিদ্ধান্ত হয়।