স্টাফ রিপোর্টার॥ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সামনে ২২ বছর আগে করা হয়েছিল ওষুধি গাছগাছালি দিয়ে ভেষজ বাগান। অযন্ত্র – অবহেলায় এই বাগনটি অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে।
জানাগেছে, ভেষজ বাগানে ৫০ প্রজাতি গাছ লাগানোর কথা থাকলেও মাত্র ৩৫টি প্রজাতির স্থান হয়েছিল বাকি ১৫টি প্রজাতি পরবর্তীকালে রোপণের কথা ছিল। তার মধ্যে বেশকিছু মূল্যবান প্রজাতি অযত্ন-অবহেলার কারণে মারা গেছে। বৃক্ষজাতীয় উদ্ভিদের মধ্যে নাগেশ্বর আর যজ্ঞডুমুর/জগডুমুর আজও টিকে আছে। একটির অবস্থাও মৃতপ্রায়। যে প্রজাতিগুলো লাগানো হয়েছিল সেগুলো হলো-আগর, অর্জুন, হরিতকি, বহেড়া আমলকি, ভেরো, পুদিনা, চালতা, গোড়ানিম, জাতনিম, পেঁপে, বাসক, ভূঁইআমলা, লজ্জাবতী, মেহেদী, বেল, সর্পগন্ধা, ঘৃতকুমারী, শতমূলী, মৌরী, উলটচন্ডাল, গোলমরিচ, বাবুই তুলসি, তেজপাতা, কালোমেঘ, অশোক, পিপুল বাদরলাঠি, নাগকেশর, কুরচি, সাজনা, শিমুল। বাকি যে প্রজাতিগুলো পরে লাগানোর তালিকায় ছিল-অনন্তমূল, অর্শগন্ধা, আসামলতা, তাকমাচি, গুলঞ্চ, জৈন/জোয়ান, তালমাখনা/কুলেখাড়া, বননীল, পুনর্নভা, ব্রাহ্মীশাক, ভৃঙ্গরাজ, মেথি ইত্যাদি। ভেষজ বাগান কর্মসূচি ২০০২-২০০৩ অর্থবছরে স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা সেক্টর কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশের ৪৬৭টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মধ্যে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভেষজ বাগান একটি। ৩০ ফুট দৈর্ঘ্যে এবং ২০ ফুট প্রস্থের এ ভেষজ বাগানটির অবস্থান হাসপাতাল ও কলেজ চত্বরের মাঝামাঝি জায়গায়। চারিদিকে রয়েছে লোহার প্রাচীর দিয়ে ঘেরা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ভেষজ বাগানের যত্ন নেবার জন্য দক্ষ মালি নিয়োগ এবং যেগুলো এখনও টিকে আছে সেগুলোতে নামফলক স্থাপন করে আগ্রহী মানুষ তথা গবেষক এবং উৎসাহীদের আকৃষ্ট করতে আশু ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এটাই কামনা করেন এই ক্যাম্পাসে যাতায়াতকারী অনেকে। মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতাল ক্যাম্পাসে যারা আসেন বিশেষ করে রিকশাওয়ালা, অটোওয়ালা, অসচেতন রোগীর লোকজন ভেষজ বাগানের চারিদিকে মূত্র এমনকি মলত্যাগ করে পরিবেশ হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছেন। এ পথ দিয়েই মেডিকেল ছাত্র-ছাত্রী ছাড়াও শিক্ষক, রোগী এবং সাধারণ মানুষেরা চলাচল করে থাকেন সবসময়। বাংলা একাডেমির সহপরিচালক এবং বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবিদ করিম মুন্না জানান, আমার ছাত্রজীবন শেষে একদিন হাসপাতাল ক্যাম্পাসে এলে দেখে মুগ্ধ হই। দেখতে দেখতে বাগানটির বয়স দুদশক অতিক্রান্ত হলেও এটি অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে আছে। দেখে যেন মনে হয় কতদিন এর ভেতর কারও অনুপ্রবেশ ঘটেনি। ভেষজ বাগান রচিমহা কর্তৃপক্ষ-সাইনবোর্ড চোখে পড়লেও বেশ কয়েক বছর ধরে সেটাও সময়ের পরিক্রমায় হারিয়ে গেছে। লোহার প্রাচীরও কোনো কোনো জায়গায় ভেঙে গেছে।”