মহানগর প্রতিনিধি॥ রংপুর ও পার্শ্ববর্তী বিস্তৃত এলাকায় বর্তমানে আলু উত্তোলনের ধুম পড়েছে। এতে করে শ্রমিকদের সংকট দেখা দেয়ার কথা থাকলেও আলু মৌসুমের মৌসুমী শ্রমিকদের কল্যাণে কৃষকদের আলু উত্তোলন প্রায় স্বাভাবিক গতিতে এগিয়ে চলছে।
জানা যায়, রংপুর বিস্তৃত এলাকায় আলু মৌসুমে প্রায় একযোগে আলু উত্তোলন শুরু হয়ে যায়। যেহেতু আলু তোলার পর বোরো ধান লাগানোর প্রয়োজন থাকে, তাই দ্রুত উত্তোলনের চেষ্টা সকল কৃষকদের মধ্যেই দেখা যায়। ফলে এ সময় অতিরিক্ত শ্রমিকের প্রয়োজন দেখা যায়। চলতি বছরেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে আলু উত্তোলনে মৌসুমী শ্রমিকেরা এগিয়ে আসায় কৃষকদের সেই দুর্ভোগে পড়তে হয়নি। মৌসমী শ্রমিক বলতে, যারা পেশাদার শ্রমিক নন, তবে অসচ্ছল। বিভিন্ন বয়সের গৃহিণী কিংবা উপার্জনহীন পরিবারের সদস্যসহ কম বয়সের ছেলে-মেয়ে যারা শুধু আলু মৌসুমে নির্দিষ্ট হাজিরা কিংবা আলুর বিনিময়ে কাজ করেন। এভাবে কেউ তাদের সংসারে সাহায্য করেন, কেউ অর্থ সঞ্চয় করেন। এ নিয়ে কথা হয় বড়দরগা এলাকার সাইদুল ইসলামের সাথে। তিনি জানান তার এলাকার নারী শ্রমিকরা দিন হাজিরা ৩’ থেকে সাড়ে ৩’শ টাকায় আলু উত্তোলনের কাজ করে চলেছেন। অপরদিকে পুরুষ শ্রমিকদের দিন ৫’শ থেকে সাড়ে ৫’শ টাকা করে পারিশ্রমিক দিতে হয়। পুরুষ শ্রমিকের পাশাপাশি নারী শ্রমিক থাকায় কাজ অনেক সহজ ও সস্তায় হচ্ছে।
নারী শ্রমিক আফরোজা বেগম, নাসরিন আক্তার ও জমিলা বেগম জানান তারা কেহই পেশাদার শ্রমিক নন। তাদের পরিবারে উপার্জিত আয় দিয়ে বাচ্চাদের পড়াশোনাসহ সাংসারিক খরচ সংকলন হয় না, তাই তারা আলু মৌসুমে কাজ করে সংসারের জন্য আর্থিক ঝুঁকি কমানো তথা স্বাচ্ছন্দের আশায় শ্রম বিক্রি করে অতিরিক্ত আয়ের চেষ্টা করেন। তবে তাদের কেউ কেউ পুরুষ শ্রমিকের তুলনায় নারীদের অনেক কম টাকা দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। স্কুল পড়ুয়া আফরিন বেগম তিনিও মৌসুমী শ্রমিকদের সাথে কাজ করে নিজের সঞ্চয় বাড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন। সিটি কর্পোরেশন এলাকার বদরুল ইসলাম নামের একজন শিক্ষক জানান, আলু উত্তোলনের মৌসুমে বিভিন্ন বয়সী মৌসুমী শ্রমিকেরা এই আলু উত্তোলনে নিয়োজিত থাকায় কৃষকদের কাজ যেমন সহজ হয় ,তেমনি মাঠ পর্যায়ে অনেকটা উৎসবের আমেজ লক্ষ্য করা যায়।