10:59 pm, Saturday, 23 November 2024

স্বৈরাচারের সময় ৬০ লাখ নেতাকর্মীর নামে গায়েবি মামলা হয়েছে: তারেক রহমান

  • Reporter Name
  • Update Time : 04:57:55 pm, Saturday, 23 November 2024
  • 0 Time View

বিগত আওয়ামী স্বৈরাচারের সময় প্রায় ৬০ লাখ নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তবে নেতাকর্মীদের নামে দায়ের করা এসব গায়েবি মামলা পর্যায়ক্রমে প্রত্যাহার করা হবে বলে তিনি সবাইকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

বিষয়টি নিয়ে অন্তর্র্বতী সরকারের সঙ্গে কথা বলছেন বলেও নেতাকর্মীদের আশ্বস্ত করেছেন তিনি।

শনিবার (২৪ নভেম্বর) বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রশ্নোত্তর পর্বে তারেক রহমান নেতাকর্মীদের এ আশ্বাস দেন। রাজশাহী জেলা পরিষদ মিলনায়তনে দিনব্যাপী এ কর্মশালার আয়োজন করে বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণবিষয়ক কমিটি। এতে রাজশাহী বিভাগের আট জেলার নেতাকর্মীরা অংশ নেন। বিকেলে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের জন্য নিজের ৩১ দফার বিষয়ে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। গায়েবি মামলা প্রত্যাহারের উদ্যোগ নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষকদলের যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম কবিরের এক প্রশ্নের জবাবে তারেক রহমান বলেন, বিগত স্বৈরাচারের সময় আমাদের প্রায় ৬০ লাখ নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা হয়েছে। এটি গায়েবি মামলা নামে সারা দেশে পরিচিত। অবশ্যই আমরা এ ব্যাপারে সরকারের সঙ্গে কথা বলছি। এটি একটি আইনগত প্রক্রিয়া, চলমান প্রক্রিয়া এটি। একবারে হয়তো সম্ভব হবে না। পর্যায়ক্রমে নিশ্চয় আমরা গায়েবি মামলা প্রত্যাহার করার বা করাতে সক্ষম হবো। এ সময় বগুড়ার অ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হক দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে জানান, বর্তমানে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ধরে আনছে, কিন্তু আদালতে সঙ্গে সঙ্গে জামিন হচ্ছে। অথচ আগে বিএনপির নেতাকর্মীর জামিন হয়নি এত দ্রুত। এ বিচারকদের ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ প্রশ্নের জবাবে তারেক রহমান বলেন, আমাদের সঙ্গে ওদের পার্থক্যটা এখানেই। আমরা যে বৈষম্যের শিকার হয়েছি, সেটিকে আমরা ভাঙতে চাই। তিনি আরও বলেন, বৈষম্যের শিকার যাতে মানুষ না হয়, সেই প্র্যাকটিসটা আমরা গড়ে তুলতে চাই। এজন্য একটু সময়ের প্রয়োজন। বিগত স্বৈরাচার সরকার শুধু বিচার ব্যবস্থা নয়, প্রতিটি ব্যবস্থাকে ভেঙেচুরে নষ্ট করে দিয়েছে। আমরা দেখেছি কোনটা ডামি নির্বাচন, কোনটা নিশিরাতের নির্বাচন, কোনটা দেখেছি ভোট ডাকাতির নির্বাচন। কোনোবারই প্রকৃত জনপ্রতিনিধি ছিল না। তাই তারা যা ইচ্ছা তাই করেছে। আমরা আগামী দিনে চাইছি প্রকৃত একজন জনপ্রতিনিধি। আগামী দিনে যারা যোগ্য, সেই যোগ্য মানুষটিকে যোগ্য জায়গায় স্থান যদি আমরা দিতে পারি, তাহলেই এ দেশটাকে আমরা পরিবর্তন করতে পারবো। রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে সব তথ্য নাগরিকের জন্য উন্মুক্ত থাকবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তারেক রহমান বলেন, এখানে একটি বিষয় আছে। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার কিছু বিষয় থাকে। এ বিষয়, যেগুলোকে স্বাভাবিক নিরাপত্তার নজরে দেখতে হবে। সব ডিসক্লোজ করা সব সময় বোধ হয় করা যায় না, সম্ভব না। এর বাইরে যেগুলো থাকবে সেগুলো অবশ্যই স্বচ্ছ থাকবে। যে কেউ দেখতে পারবে। এ সিস্টেমটা আমাদের গড়ে তুলতে হবে। ফারাক্কা বাঁধ থেকে পদ্মার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের ব্যাপারে দলের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন করেন আরেক নেতা। এ সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ফারাক্কা বাঁধের বিষয়ে আমাদের একটি ধারণা আছে। এটি একটি আন্তর্জাতিক বিষয়। বিএনপির বাইরে অন্য সরকার যখন ক্ষমতায় এসেছে, তারা যথাযথভাবে এটা দেখেনি। আর পতিত স্বৈরাচার সরকার ইচ্ছা করেই করেনি প্রতিবেশী দেশকে খুশি করার জন্য। এটা আন্তর্জাতিক লবি, আমরা সময়মতো অবশ্যই বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কাজ করবো। প্রয়োজনে দেশের স্বার্থে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের নিয়েই কাজ করবো আমাদের ন্যায্য হিস্যা আদায়ের জন্য।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

স্বৈরাচারের সময় ৬০ লাখ নেতাকর্মীর নামে গায়েবি মামলা হয়েছে: তারেক রহমান

স্বৈরাচারের সময় ৬০ লাখ নেতাকর্মীর নামে গায়েবি মামলা হয়েছে: তারেক রহমান

Update Time : 04:57:55 pm, Saturday, 23 November 2024

বিগত আওয়ামী স্বৈরাচারের সময় প্রায় ৬০ লাখ নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তবে নেতাকর্মীদের নামে দায়ের করা এসব গায়েবি মামলা পর্যায়ক্রমে প্রত্যাহার করা হবে বলে তিনি সবাইকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

বিষয়টি নিয়ে অন্তর্র্বতী সরকারের সঙ্গে কথা বলছেন বলেও নেতাকর্মীদের আশ্বস্ত করেছেন তিনি।

শনিবার (২৪ নভেম্বর) বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রশ্নোত্তর পর্বে তারেক রহমান নেতাকর্মীদের এ আশ্বাস দেন। রাজশাহী জেলা পরিষদ মিলনায়তনে দিনব্যাপী এ কর্মশালার আয়োজন করে বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণবিষয়ক কমিটি। এতে রাজশাহী বিভাগের আট জেলার নেতাকর্মীরা অংশ নেন। বিকেলে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের জন্য নিজের ৩১ দফার বিষয়ে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। গায়েবি মামলা প্রত্যাহারের উদ্যোগ নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষকদলের যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম কবিরের এক প্রশ্নের জবাবে তারেক রহমান বলেন, বিগত স্বৈরাচারের সময় আমাদের প্রায় ৬০ লাখ নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা হয়েছে। এটি গায়েবি মামলা নামে সারা দেশে পরিচিত। অবশ্যই আমরা এ ব্যাপারে সরকারের সঙ্গে কথা বলছি। এটি একটি আইনগত প্রক্রিয়া, চলমান প্রক্রিয়া এটি। একবারে হয়তো সম্ভব হবে না। পর্যায়ক্রমে নিশ্চয় আমরা গায়েবি মামলা প্রত্যাহার করার বা করাতে সক্ষম হবো। এ সময় বগুড়ার অ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হক দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে জানান, বর্তমানে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ধরে আনছে, কিন্তু আদালতে সঙ্গে সঙ্গে জামিন হচ্ছে। অথচ আগে বিএনপির নেতাকর্মীর জামিন হয়নি এত দ্রুত। এ বিচারকদের ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ প্রশ্নের জবাবে তারেক রহমান বলেন, আমাদের সঙ্গে ওদের পার্থক্যটা এখানেই। আমরা যে বৈষম্যের শিকার হয়েছি, সেটিকে আমরা ভাঙতে চাই। তিনি আরও বলেন, বৈষম্যের শিকার যাতে মানুষ না হয়, সেই প্র্যাকটিসটা আমরা গড়ে তুলতে চাই। এজন্য একটু সময়ের প্রয়োজন। বিগত স্বৈরাচার সরকার শুধু বিচার ব্যবস্থা নয়, প্রতিটি ব্যবস্থাকে ভেঙেচুরে নষ্ট করে দিয়েছে। আমরা দেখেছি কোনটা ডামি নির্বাচন, কোনটা নিশিরাতের নির্বাচন, কোনটা দেখেছি ভোট ডাকাতির নির্বাচন। কোনোবারই প্রকৃত জনপ্রতিনিধি ছিল না। তাই তারা যা ইচ্ছা তাই করেছে। আমরা আগামী দিনে চাইছি প্রকৃত একজন জনপ্রতিনিধি। আগামী দিনে যারা যোগ্য, সেই যোগ্য মানুষটিকে যোগ্য জায়গায় স্থান যদি আমরা দিতে পারি, তাহলেই এ দেশটাকে আমরা পরিবর্তন করতে পারবো। রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে সব তথ্য নাগরিকের জন্য উন্মুক্ত থাকবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তারেক রহমান বলেন, এখানে একটি বিষয় আছে। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার কিছু বিষয় থাকে। এ বিষয়, যেগুলোকে স্বাভাবিক নিরাপত্তার নজরে দেখতে হবে। সব ডিসক্লোজ করা সব সময় বোধ হয় করা যায় না, সম্ভব না। এর বাইরে যেগুলো থাকবে সেগুলো অবশ্যই স্বচ্ছ থাকবে। যে কেউ দেখতে পারবে। এ সিস্টেমটা আমাদের গড়ে তুলতে হবে। ফারাক্কা বাঁধ থেকে পদ্মার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের ব্যাপারে দলের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন করেন আরেক নেতা। এ সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ফারাক্কা বাঁধের বিষয়ে আমাদের একটি ধারণা আছে। এটি একটি আন্তর্জাতিক বিষয়। বিএনপির বাইরে অন্য সরকার যখন ক্ষমতায় এসেছে, তারা যথাযথভাবে এটা দেখেনি। আর পতিত স্বৈরাচার সরকার ইচ্ছা করেই করেনি প্রতিবেশী দেশকে খুশি করার জন্য। এটা আন্তর্জাতিক লবি, আমরা সময়মতো অবশ্যই বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কাজ করবো। প্রয়োজনে দেশের স্বার্থে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের নিয়েই কাজ করবো আমাদের ন্যায্য হিস্যা আদায়ের জন্য।