5:13 am, Friday, 22 November 2024

প্রচলিত ধারা ও ধর্মীয় আবহে জমে উঠেছে রাসমেলা

  • Reporter Name
  • Update Time : 05:58:00 pm, Thursday, 21 November 2024
  • 2 Time View

মোঃ হাসেম আলী, মহানগর প্রতিনিধি॥ বাংলার আনাচে-কানাচে যে সকল ঐতিহ্যবাহী মেলা প্রচলিত রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে রাস মেলা। তবে এ মেলার সাথে হিন্দু ধর্মীয় কিছু রীতি ও আচারের সংমিশ্রণ থাকায় এ মেলাটি বরাবরই প্রচলিত মেলার তুলনায় অতিরিক্ত মাত্রাযুক্ত হয়। বরাবরের মতো এ বছরেও মাহিগঞ্জ শ্রী শ্রী পরেশনাথ মন্দিরের আয়োজনে মন্দির প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ১২ দিন ব্যাপী রাস মেলা। সঙ্গত কারণে, প্রচলিত মেলার সাথে ধর্মীয় আবহে অনুষ্ঠিত মেলাটি বেশ জমে উঠেছে। হিন্দু ধর্মীয় মতে, রাস উৎসব এর অর্থগত দিক অত্যন্ত ব্যাপক। তবুও সাধারণ কথায় মহাবতার শ্রীকৃষ্ণ রাস সঞ্চারের জন্য যে লীলা করেছেন তা হিন্দু ধর্মাবলম্বী সহ ভক্তদের জ্ঞাত করার উদ্দেশ্যেই রাস উৎসব, তথা রাসমেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে ।  সঙ্গত কারণে মেলায় এরকম অনেক প্রতিমা সাজিয়ে রেখে মূলত শ্রীকৃষ্ণের বিভিন্ন রস, রূপেরই প্রকাশ ঘটানোর চেষ্টা করা হয়েছে। এর মধ্যে বৃন্দাবন,  রাধা কৃষ্ণের ঝুলন, স্নেহের শাসন, প্রণামী, শ্রীকৃষ্ণের হোলি, বুদ্ধু অবতার, বেহুলা লক্ষিন্দার,  মৎস্য অবতার, বরাহ অবতার ইত্যাদি। এছাড়া প্রতিদিনই এখানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে পূজা অর্চনা ধর্মীয় সংগীত, ভজন কীর্তন, পালা গান ,নাটক সহ  বিভিন্ন সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পাশাপাশি এই মেলা উপলক্ষে মন্দির প্রাঙ্গণ এলাকায় হরেক রকমের পণ্য নিয়ে বিভিন্ন স্টল সাজানো হয়েছে।  এর মধ্যে মাটির তৈরি তৈজসপত্র, খেলনা সামগ্রী,  কসমেটিক্স সামগ্রী, জুয়েলারি সামগ্রী, হাতে তৈরি বিভিন্ন নিত্য ব্যবহার্য জিনিস, পোস্টার বেলুন, খাবারের দোকানসহ অনেক দূর দূরান্ত থেকে আগত ব্যবসায়ীরা তাদের পন্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। সব মিলিয়ে মেলায় প্রচুর দর্শনার্থীর সমাগম হচ্ছে। নারী-পুরুষ বৃদ্ধ বাচ্চা সকলের সারি সারি যাতায়াত এলাকায় বাড়তি সৌন্দর্য  সৃষ্টির পাশাপাশি মেলাটি সার্বজনীন মেলায় পরিণত হয়েছে। গাইবান্ধা থেকে আগত ব্যবসায়ী সুকুমার জানান প্রায় প্রতিবছর রকমারি পণ্য নিয়ে তিনি ভালো ব্যবসার আশায় এই মেলায় আসেন। দর্শনার্থীদের আনন্দ-পূণ্য কেনাকাটাকে খুবই ইনজয় করেন। রনজিত কুমার নামে এক দর্শণার্থী জানান এ মেলাটা প্রায় দু ,সপ্তাহ ধরে হয়, পরিবারের সবাইকে নিয়ে এক -দুই দিন ঘোরাঘুরি, আনন্দ, ধর্ম কর্ম সবই করা যায়। মন্দির কমিটির সভাপতি  বীর মুক্তিযোদ্ধা বাবু রামকৃষ্ণ সোমানি জানিয়েছেন মেলার পরিবেশ অত্যন্ত সুন্দর বিধায় লোকসমাগম বেশি হচ্ছে। তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। রাস মেলার আহবায়ক শ্রী মঙ্গল মোহন্ত জানান ,প্রায় ৪৩ বছর ধরে চলা এ মেলা এলাকায় সম্প্রিতির বন্ধন সৃষ্টিতে বিশেষ ভুমিকা রাখে। এ রাস মেলা গত ১৫ নভেম্বর শুরু হয়েছে শেষ হবে ২৭ ডিসেম্বর।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

প্রচলিত ধারা ও ধর্মীয় আবহে জমে উঠেছে রাসমেলা

Update Time : 05:58:00 pm, Thursday, 21 November 2024

মোঃ হাসেম আলী, মহানগর প্রতিনিধি॥ বাংলার আনাচে-কানাচে যে সকল ঐতিহ্যবাহী মেলা প্রচলিত রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে রাস মেলা। তবে এ মেলার সাথে হিন্দু ধর্মীয় কিছু রীতি ও আচারের সংমিশ্রণ থাকায় এ মেলাটি বরাবরই প্রচলিত মেলার তুলনায় অতিরিক্ত মাত্রাযুক্ত হয়। বরাবরের মতো এ বছরেও মাহিগঞ্জ শ্রী শ্রী পরেশনাথ মন্দিরের আয়োজনে মন্দির প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ১২ দিন ব্যাপী রাস মেলা। সঙ্গত কারণে, প্রচলিত মেলার সাথে ধর্মীয় আবহে অনুষ্ঠিত মেলাটি বেশ জমে উঠেছে। হিন্দু ধর্মীয় মতে, রাস উৎসব এর অর্থগত দিক অত্যন্ত ব্যাপক। তবুও সাধারণ কথায় মহাবতার শ্রীকৃষ্ণ রাস সঞ্চারের জন্য যে লীলা করেছেন তা হিন্দু ধর্মাবলম্বী সহ ভক্তদের জ্ঞাত করার উদ্দেশ্যেই রাস উৎসব, তথা রাসমেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে ।  সঙ্গত কারণে মেলায় এরকম অনেক প্রতিমা সাজিয়ে রেখে মূলত শ্রীকৃষ্ণের বিভিন্ন রস, রূপেরই প্রকাশ ঘটানোর চেষ্টা করা হয়েছে। এর মধ্যে বৃন্দাবন,  রাধা কৃষ্ণের ঝুলন, স্নেহের শাসন, প্রণামী, শ্রীকৃষ্ণের হোলি, বুদ্ধু অবতার, বেহুলা লক্ষিন্দার,  মৎস্য অবতার, বরাহ অবতার ইত্যাদি। এছাড়া প্রতিদিনই এখানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে পূজা অর্চনা ধর্মীয় সংগীত, ভজন কীর্তন, পালা গান ,নাটক সহ  বিভিন্ন সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পাশাপাশি এই মেলা উপলক্ষে মন্দির প্রাঙ্গণ এলাকায় হরেক রকমের পণ্য নিয়ে বিভিন্ন স্টল সাজানো হয়েছে।  এর মধ্যে মাটির তৈরি তৈজসপত্র, খেলনা সামগ্রী,  কসমেটিক্স সামগ্রী, জুয়েলারি সামগ্রী, হাতে তৈরি বিভিন্ন নিত্য ব্যবহার্য জিনিস, পোস্টার বেলুন, খাবারের দোকানসহ অনেক দূর দূরান্ত থেকে আগত ব্যবসায়ীরা তাদের পন্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। সব মিলিয়ে মেলায় প্রচুর দর্শনার্থীর সমাগম হচ্ছে। নারী-পুরুষ বৃদ্ধ বাচ্চা সকলের সারি সারি যাতায়াত এলাকায় বাড়তি সৌন্দর্য  সৃষ্টির পাশাপাশি মেলাটি সার্বজনীন মেলায় পরিণত হয়েছে। গাইবান্ধা থেকে আগত ব্যবসায়ী সুকুমার জানান প্রায় প্রতিবছর রকমারি পণ্য নিয়ে তিনি ভালো ব্যবসার আশায় এই মেলায় আসেন। দর্শনার্থীদের আনন্দ-পূণ্য কেনাকাটাকে খুবই ইনজয় করেন। রনজিত কুমার নামে এক দর্শণার্থী জানান এ মেলাটা প্রায় দু ,সপ্তাহ ধরে হয়, পরিবারের সবাইকে নিয়ে এক -দুই দিন ঘোরাঘুরি, আনন্দ, ধর্ম কর্ম সবই করা যায়। মন্দির কমিটির সভাপতি  বীর মুক্তিযোদ্ধা বাবু রামকৃষ্ণ সোমানি জানিয়েছেন মেলার পরিবেশ অত্যন্ত সুন্দর বিধায় লোকসমাগম বেশি হচ্ছে। তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। রাস মেলার আহবায়ক শ্রী মঙ্গল মোহন্ত জানান ,প্রায় ৪৩ বছর ধরে চলা এ মেলা এলাকায় সম্প্রিতির বন্ধন সৃষ্টিতে বিশেষ ভুমিকা রাখে। এ রাস মেলা গত ১৫ নভেম্বর শুরু হয়েছে শেষ হবে ২৭ ডিসেম্বর।