6:45 pm, Thursday, 21 November 2024

পীরগঞ্জে বীজ আলুর জন্য হাহাকার কৃষকদের!

  • Reporter Name
  • Update Time : 05:02:46 pm, Tuesday, 19 November 2024
  • 2 Time View

পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি॥ রংপুরের পীরগঞ্জে বীজ আলুর সংকটে কৃষকের মাঝে হাহাকার শুরু হয়েছে। এমনিতেই খাবার আলুর বাজার মুল্য বেশি। আর বীজ আলুর দাম দ্বিগুণ এবং সংকট। ফলে জমি তৈরি করেও চাষীরা আলু চাষ করতে পারছেন না। পীরগঞ্জ আলু চাষে বিখ্যাত হলেও বীজ সংকটের কারণে যেন ‘আড়তেই ঘি মঙ্গা’র অবস্থা চলছে। আর সংকটের সুযোগ নিয়েছে বেসরকারী বীজ প্রক্রিয়াজাত কোম্পানীগুলো। উপজেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, পীরগঞ্জের কৃষকেরা জমিতে বছরে তিনটি করে ফসল চাষ করছেন। বোরো ধান চাষের আগেই অনেক জমিতে আলু, সরিষা, পেঁয়াজ চাষ করেন। এছাড়াও ৬০ থেকে ৯০ দিনের রবি ফসল আবাদ করে কৃষকরা ফসল ঘরে তুলতে পারেন বলেই ব্যাপকহারে আলু চাষে ঝুঁকেছেন। আলুর পরই ইরি-বোরো ধান লাগানো সম্ভব হয়। চলতি মওসুমে পীরগঞ্জের ৩৩১ টি গ্রামে এবারে ৬ হাজার ৭৫০ হেক্টর (৫০ হাজার ৪২২ বিঘা) জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আলু লাভজনক হওয়য় লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি আবাদ হতে পারে। গতবারের চেয়ে এবারে প্রায় ৫’শ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হচ্ছে। বীজ সংকট এবং বেশি মুল্যের কারণে কৃষকরা শংকিত হয়ে পড়েছেন। তবে জয়পুরহাট জেলায় আলু লাগানো শেষ হওয়ায় সেখান থেকে বীজ আলু আসতে পারে বলে উপজেলা কৃষি কর্মকমর্তা সাদেকুজ্জামান সরকার জানান। নাম না প্রকাশের শর্তে পীরগঞ্জের কৃষিকল বীজ হিমাগার, শান্তনা কোল্ড ষ্টোরেজ, তছির উদ্দিন কোল্ড ষ্টোরেজ সহ কয়েকটি হিমাগারের আলু ব্যবসায়ী জানান, ব্র্যাক, সুপ্রীম সীডস্ এবং ওয়ান কেয়ার কোম্পানী তাদের বীজ আলু হিমাগার থেকে ট্রাকে লোড করে ডিলারদের কাছে পাঠাচ্ছে। কৃষকরা সরাসরি বীজ পাচ্ছেন না। অপরদিকে বিএডিসি’র বীজ এখনও আসেনি। যেটুকু বরাদ্দ আসে, তা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চলে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে। দুরামিঠিপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন জানান, ব্র্যাকের প্রতি কেজি স্টীক এবং পাকড়ী বীজ আলু ১৩০ টাকা এবং জাম (ইন্দু কানি) ৭০ টাকা দরে কিনে আলু লাগাচ্ছি। তবে বীজও সংকট। টুকুরিয়া ইউনিয়নের চাষী শফিকুল ইসলাম বলেন, আলুর জায়গায় আলু বীজের সংকট আর চড়া মুল্যে মনে হয়, যেন ‘আড়তেই ঘি মঙ্গা! বীজ আলুর উর্ধ্ব মুল্য এবং সংকটের কথা স্বীকার করে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাদেকজ্জামান সরকার বলেন, ১ কেজি আলু উৎপাদনে ১০/১২ টাকা খরচ হওয়ায় কৃষকরা আলুতে মনোনিবেশ করেছে। তারা ভিত্তি বীজ, প্রত্যয়িত বীজ এবং মান ঘোষিত বীজ আলুর উপর বেশি নির্ভরশীল হচ্ছেন। কৃষকরা বীজ আলুর অতিরিক্ত মুল্যের কথা বললে আমরা ভোক্তা অধিকার এবং ইউএনও স্যারকে নিয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবো। রংপুর অঞ্চলের বিএডিসি সীড মার্কেটিংয়ের উপপরিচালক মাসুদ সুলতান বলেন, ২০ নভেম্বর থেকে বিএডিসর আলু বিতরণ করা হবে। এবারে প্রতি কেজি আলু ৬৫/৬৬ টাকায় বিক্রি করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

মমতাজ শিরীন ভরসার শোক প্রকাশ

পীরগঞ্জে বীজ আলুর জন্য হাহাকার কৃষকদের!

Update Time : 05:02:46 pm, Tuesday, 19 November 2024

পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি॥ রংপুরের পীরগঞ্জে বীজ আলুর সংকটে কৃষকের মাঝে হাহাকার শুরু হয়েছে। এমনিতেই খাবার আলুর বাজার মুল্য বেশি। আর বীজ আলুর দাম দ্বিগুণ এবং সংকট। ফলে জমি তৈরি করেও চাষীরা আলু চাষ করতে পারছেন না। পীরগঞ্জ আলু চাষে বিখ্যাত হলেও বীজ সংকটের কারণে যেন ‘আড়তেই ঘি মঙ্গা’র অবস্থা চলছে। আর সংকটের সুযোগ নিয়েছে বেসরকারী বীজ প্রক্রিয়াজাত কোম্পানীগুলো। উপজেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, পীরগঞ্জের কৃষকেরা জমিতে বছরে তিনটি করে ফসল চাষ করছেন। বোরো ধান চাষের আগেই অনেক জমিতে আলু, সরিষা, পেঁয়াজ চাষ করেন। এছাড়াও ৬০ থেকে ৯০ দিনের রবি ফসল আবাদ করে কৃষকরা ফসল ঘরে তুলতে পারেন বলেই ব্যাপকহারে আলু চাষে ঝুঁকেছেন। আলুর পরই ইরি-বোরো ধান লাগানো সম্ভব হয়। চলতি মওসুমে পীরগঞ্জের ৩৩১ টি গ্রামে এবারে ৬ হাজার ৭৫০ হেক্টর (৫০ হাজার ৪২২ বিঘা) জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আলু লাভজনক হওয়য় লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি আবাদ হতে পারে। গতবারের চেয়ে এবারে প্রায় ৫’শ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হচ্ছে। বীজ সংকট এবং বেশি মুল্যের কারণে কৃষকরা শংকিত হয়ে পড়েছেন। তবে জয়পুরহাট জেলায় আলু লাগানো শেষ হওয়ায় সেখান থেকে বীজ আলু আসতে পারে বলে উপজেলা কৃষি কর্মকমর্তা সাদেকুজ্জামান সরকার জানান। নাম না প্রকাশের শর্তে পীরগঞ্জের কৃষিকল বীজ হিমাগার, শান্তনা কোল্ড ষ্টোরেজ, তছির উদ্দিন কোল্ড ষ্টোরেজ সহ কয়েকটি হিমাগারের আলু ব্যবসায়ী জানান, ব্র্যাক, সুপ্রীম সীডস্ এবং ওয়ান কেয়ার কোম্পানী তাদের বীজ আলু হিমাগার থেকে ট্রাকে লোড করে ডিলারদের কাছে পাঠাচ্ছে। কৃষকরা সরাসরি বীজ পাচ্ছেন না। অপরদিকে বিএডিসি’র বীজ এখনও আসেনি। যেটুকু বরাদ্দ আসে, তা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চলে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে। দুরামিঠিপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন জানান, ব্র্যাকের প্রতি কেজি স্টীক এবং পাকড়ী বীজ আলু ১৩০ টাকা এবং জাম (ইন্দু কানি) ৭০ টাকা দরে কিনে আলু লাগাচ্ছি। তবে বীজও সংকট। টুকুরিয়া ইউনিয়নের চাষী শফিকুল ইসলাম বলেন, আলুর জায়গায় আলু বীজের সংকট আর চড়া মুল্যে মনে হয়, যেন ‘আড়তেই ঘি মঙ্গা! বীজ আলুর উর্ধ্ব মুল্য এবং সংকটের কথা স্বীকার করে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাদেকজ্জামান সরকার বলেন, ১ কেজি আলু উৎপাদনে ১০/১২ টাকা খরচ হওয়ায় কৃষকরা আলুতে মনোনিবেশ করেছে। তারা ভিত্তি বীজ, প্রত্যয়িত বীজ এবং মান ঘোষিত বীজ আলুর উপর বেশি নির্ভরশীল হচ্ছেন। কৃষকরা বীজ আলুর অতিরিক্ত মুল্যের কথা বললে আমরা ভোক্তা অধিকার এবং ইউএনও স্যারকে নিয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবো। রংপুর অঞ্চলের বিএডিসি সীড মার্কেটিংয়ের উপপরিচালক মাসুদ সুলতান বলেন, ২০ নভেম্বর থেকে বিএডিসর আলু বিতরণ করা হবে। এবারে প্রতি কেজি আলু ৬৫/৬৬ টাকায় বিক্রি করা হবে।