পাটগ্রাম প্রতিনিধি: লালমনিরহাটে “বউ-শাশুড়ির অঙ্গীকার, গর্ভকালীন সেবার অধিকার” স্লোগান নিয়ে দিনব্যাপী বউ-শাশুড়ির মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার (২৭ অক্টোবর) সকালে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জের চলবলা ইউনিয়ন পরিষদ চত্ত্বরে জননী প্রকল্পের আয়োজনে এ দিনব্যাপী বউ-শাশুড়ির মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
চলবলা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ আলাল উদ্দিন-এঁর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন লালমনিরহাট পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক (অ.দা.) মোঃ মোজাম্মেল হক। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলী রাজিব মোঃ নাসের, জননী প্রকল্পের প্রকল্প সমন্বয়কারী মোঃ ফরাজদুক ভূঞা, উপজেলা পরিপার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোঃ কামরুল হাসান, সোনাহাট স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুল মোত্তালেব, জননী প্রকল্পের জেলা সমন্বয়কারী মোঃ মাঈনুদ্দিন ভূইয়া প্রমুখ।
লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় মা ও শিশু স্বাস্থ্য নিয়ে গণ সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে “জননী প্রকল্পে”র সহযোগিতায় বউ-শ্বাশুড়ির মেলার আয়োজন করা হয়। জননী প্রকল্পটি গর্ভবতী মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ বৃদ্ধি করতে সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। গর্ভবতী মা ও নবজাতক ছাড়াও প্রকল্পটি কিশোর-কিশোরী, বিবাহিত নারীদের স্বামী, শ্বাশুড়ী ও শ্বশুড়বাড়ীর অন্যান্য লোকজনের সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে । এই কর্মসূচির ধারাবাহিকতা হিসাবে গর্ভবতী নারীদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি ও আচরন পরিবর্তনের জন্য জেলার বিভিন্নি ইউনিয়নে বউ-শ্বাশুড়ীর মেলার আয়োজন করছে। জননী প্রকল্পের আরো একটি উদ্দেশ্য হলো মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্য সেবায় সেবাদানকারী সকল ব্যক্তিকে নিজ দায়িত্বের ব্যাপারে আরো উদ্বুদ্ধ ও উৎসাহিত করা।
“বউ-শ্বাশুড়ির অঙ্গীকার, গর্ভকালীন সেবার অধিকার” প্রতিপাদ্য ও ”জিরো হোম ডেলিভারী” থিমকে সামনে রেখে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সাথে আরডিআরএস বাংলাদেশ গত বছর হতে রংপুর বিভাগের রংপুর ও লালমনিরহাট জেলায় জননী প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পটিতে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে “কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (কোইকা)”, কারিগরি সহায়তা করছে “সেভ দ্যা চিলড্রেন” এবং গবেষনা ও মূল্যায়ন সহায়তায় আছে আইসিডিডিআর’বি।
এলাকার বউ-শ্বাশুড়ি-স্বামী সহ সর্বস্তরের মানুষ মেলায় অংশগ্রহন করেন। ভিডিও শো, আলোচনা, বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী দপ্তরের স্টল প্রদর্শন ও তথ্য প্রদানের মাধ্যমে মেলার কার্যক্রম চলে। উপস্থিত প্রত্যেক গর্ভবতী ও প্রসূতি মাকে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ হতে একটি করে গাছের চারা প্রদান করা হয় ।
মেলায় অংশ করতে আসা প্রসূতি মা মোছা: নাজমিন আক্তার বলেন, গর্ভবতী নারীদের নিয়ে এলা আর কোন চিন্তা নাই, সব দায়িত্ব জননী প্রকল্প নিছে। বাড়ির কাছেই ঔষধ-চেকআপ-প্রসব সব বিনামূল্যে পাওয়া যাচ্ছে।”
মূলত জননী প্রকল্প মা ও নবজাতক স্বাস্থ্য বিষয়ক একটি দীর্ঘ্য মেয়াদী কর্ম পরিকল্পনা নিয়ে গত বছর থেকে কাজ শুরু করেছে । প্রকল্পটির মূল লক্ষ্য হচ্ছে বিভাগের মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার কমিয়ে আনা এবং বাল্যবিবাহ রোধ কল্পে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা । এ লক্ষ্যে তারা সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ যেমন, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ, স্থানীয় সরকারের সাথে সমন্বয় করে কাজ করছে।