রাজীবপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি॥ কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলার ভারত-বাংলা বর্ডার হাট বন্ধ থাকায় কর্মহীন বেকার হয়ে দুর্বিসহ দিন কাটাচ্ছে হাট সংশিষ্ট ক্রেতা-বিক্রেতাসহ স্থানীয় অন্তত ১০ হাজার মানুষ। আয়-রোজগারহীন হয়ে দুই মাস যাবৎ অতি কষ্টে দিন পার করছে তারা। দ্রুত হাটটি খুলে দেয়ার দাবী ক্রেতা-বিক্রেতা ও স্থানীয়দের।
প্রতিবেশী দেশ ভারতের সাথে ব্যবসায়িক লেনদেন এর জন্য বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার রাজীবপুর উপজেলাধীন বালিয়ামারী ব্যাপারী পাড়া এবং ভারতের তুরা জেলার আমপাতি মহুকুমার কালাইয়ের চরের মধ্যবর্তী স্থানে ২০১১ সালের ২৩ জুলাই স্থাপন করা হয় ভারত-বাংলা যৌথ বাজার। শুরুতে না জমলেও ২০১৪ সালের মাঝামাঝি এসে জমে ওঠে হাটটি, প্রসারিত হয় ব্যবসায়িক কার্যক্রম। এতে কর্মসংস্থানের সুযোগ হয় ক্রেতা-বিক্রেতাসহ কয়েক হাজার স্থানীয় মানুষয়ের।
কোটা আন্দোলনে দেশ যখন উত্তাল তখন প্রশাসনিকভাবে হাট বন্ধ করা হয়। দেশের সবকিছুই স্বাভাবিকভাবে চলমান থাকলেও, এখনও বন্ধ রয়েছে বর্ডার হাট। অপরদিকে ভারতের হাট কর্তৃপক্ষ ০১ অক্টোবর বর্ডার হাট খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে বাংলাদেশে চিঠি পাঠিয়েছে গত ২৬ সেপ্টেম্বর। কিন্ত এখনও খোলা হয় নি হাটটি।
২৫ জন বিক্রেতা, ৫৮৭ জন ক্রেতা, হাটে পণ্য বহণের জন্য কুলি-মজুর, নৌকার মাঝি, গাড়ি চালক, স্থানীয় দোকানীসহ প্রায় ৩ হাজার পরিবারের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে এই যৌথ হাট ঘিরে। দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন যাচ্ছে তাদের।
বর্ডার হাটের ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা হাটটি খুলে দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট জোরদাবী জানিয়েছেন। তারা বলছেন, হাট ঘিরে তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য এবং আয়-রোজগার। দুই মাস ধরে হাট বন্ধ, তাই কোন রোজগার নাই। তারা অতি কষ্টে দিন পার করছে। দ্রুত বাজার খুললে ডাল-ভাত খেয়ে বাঁচতে পারবে তারা।’
এ বিষয়ে বর্ডার হাট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সুরুজ্জামান বলেন “এই এলাকার প্রায় সকলেই জেলে সম্প্রদায়ের দরিদ্র মানুষ। হাট চালু থাকলে কর্ম করে চলতে পারে। তাই সরকারের নিকট আকুল আবেদন যাতে তাড়াতাড়ি হাট খুলে দেয়া হয়।”
অত্র হাটের কার্যকরী সদস্য রাজীবপুর সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিরন মোঃ ইলিয়াস জানান, ‘হাট ঘিরে অনেকের কর্মসংস্থান হয়েছে। বন্ধ থাকায় তারা কর্মহীন বেকার হয়ে গেছে। এভাবে বন্ধ থাকলে তারা চলবে কিভাবে? তাই হাটটি খুলে দেয়ার জোর দাবী জানাই।’
বর্ডার হাট খোলার বিষয়ে জানতে চাইলে, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট এবং বর্ডার হাট ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি পূবন আক্তার জানান, ‘উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ছাড়া কোন সিন্ধান্ত দিতে পারবো না।’