রংপুরে তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছ্ ে। ফলে তিস্তাপাড়ে বন্যা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তিস্তার ডালিয়া ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে রাখায় হু হু করে পানি প্রবেশ করছে। পানি বৃদ্ধির ফলে তিস্তার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানাগেছে, শনিবার রাত ১১ টায় কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে ২৯ দশমিক ৪৭ সেন্টিমিটারে প্রবাহিত হচ্ছে। ওই পয়েন্টে বিপৎসীমা ২৯ দশমিক ৩১ সেন্টিমিটার। এর আগে বেলা ৩ টায় তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে ৫২ দশমিক ১০ সেন্টিমিটারে পানি প্রবাহিত হয়েছে। এই পয়েন্টে বিপৎসীমা ধরা হয় ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার। রাতে ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। অপরদিকে কাউনিয়া পয়েন্টেও হু হু করে পানি বাড়ছে। বেলা ৩ টায় ওই পয়েন্টে পানি প্রবাহ ছিল ২৯ দশমিক ১০ সেন্টিমিটার। রাত ১১ টায় ৩৭ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে রংপুরের গঙ্গচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছায় বন্যা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় প্রশাসন সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন। স্থানীয়রা জানান, অসময়ে বন্যা হলে আমন ধান ও আগাম আলুসহ অন্যান্য ফসলের ক্ষতি হবে। ফলে কৃষকদের পথে বসতে হবে।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, রংপুর বিভাগের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীসমূহের পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, তবে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্যানুযায়ী, রংপুর বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পরিমান গত ২৪ ঘন্টায়
৮৯ মিলিমিটার। আগামী ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীসমূহের পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে এবং পরবর্তী ২ দিন হ্রাস পেতে পারে। আগামী ২৪ ঘন্টায় লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার তিস্তা নদীর পানি সমতল বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে এবং জেলাসমূহের সংশ্লিষ্ট চরাঞ্চল এবং কতিপয় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। অপরদিকে আগামী ৩ দিন পর্যন্ত কুড়িগ্রাম জেলার ধরলা ও দুধকুমার নদীসমূহের পানি সমতল বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
রংপুর বিভাগের অন্যান্য প্রধান নদীসমূহ আপার করতোয়া, আপার আত্রাই, টাঙ্গন, পূণর্ভবা, ইছামতি-যমুনা, ঘাঘট ও যমুনেশ্বরী নদী সমূহের পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত রংপুর বিভাগের এই সকল নদীসমূহের পানি সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং পরবর্তী ২ দিন নদীসমূহের পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে।
রংপুর বিভাগের ব্রহ্মপুত্র নদ ও তার ভাটিতে যমুনা নদীর পানিসমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ১ দিন ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে এবং পরবর্তি ৪ দিন স্থিতিশীল থাকতে পারে, তবে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে ।