স্টাফ রিপোর্টার॥ রংপুর নগরীর বাজারে অনেকদিন আগে থেকেই উঠেছে দেশি জাতের সবুজ মাল্টা। দেখতে যেমন সুন্দর পুষ্টি গুনেও তার জুড়ি নেই। অন্যদিকে খেতে মিষ্টি হওয়ায় ব্যাপক হারে বেড়েছে ক্রেতাদের চাহিদা। বিদেশি মাল্টার চেয়ে দামে কম হওয়ায় বিক্রিও হচ্ছে অনেক।প্রায় সব প্রতিষ্ঠিত ফল দোকানসহ ফুটপাতেও স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত এই পুষ্টিকর রসালো ফলের একক দাপট দেখা যাচ্ছে। বিদেশি মাল্টার দাম যেখানে কেজি প্রতি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা সেখানে দেশি জাতের এই মাল্টা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা কেজিতে।
বিদেশি ও দেশি মাল্টার কালার শুধু আলাদা। কিন্তু পুষ্টি গুনে দুই মাল্টাই এক জানিয়ে নগরীর কামালকাছনা বাজারে মাল্টা বিক্রেতা লাবু বলেন , এখন পর্যন্ত ভালোই বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি মাল্টা ৫০-৭০ টাকা দরে বিক্রি করছি। ২ মণ করে পাইকারি কিনি- দুই দিনেই শেষ হয়ে যায়।
নগরীর সেন্ট্রাল রোডে আরেক বিক্রেতা মিলন , এসব হচ্ছে বারী-১ দেশি জাতের মাল্টা। পাইকারিভাবে অনেক কম দামেই পাচ্ছি। বিদেশি মাল্টার চেয়ে কম দাম হওয়ায় বেশি বিক্রি হয়।
ক্রেতা ফারুক ইসলাম তিনি বলেন, এতে প্রচুর ভিটামিন সি আছে। আর বিদেশি মাল্টার চেয়ে দামে কম তাই মাঝে মাঝেই কিনি। ক্রেতা শামসুল হক বলেন, বাইরের মাল্টাতে ফরমালিন দেওয়া থাকে। তাই দেশি জিনিসের প্রতি আস্থা রাখাই ভালো। পরিবারের জন্য অন্য ফলের সাথে এই মাল্টাও কিনি।
নগরীর বাবুপাড়ার ক্রেতা আফরিন বলেন, প্রথমে এই মাল্টা খেয়ে দেখেছিলাম ভালোই লেগেছিলো তাই আবার কিনতে এসেছি। অন্য মাল্টার চেয়ে এই মাল্টার দামও অনেক কম।
তিনি আরও জানান, অন্য মাল্টা সহজেই পঁচে যায়। এটা দেখতেও ভালো আর পুষ্টিতেও অনেক গুন ভালো। এখন জ্বর সর্দির সময় অন্য ফলের দাম যখন বেশি এই মাল্টার দাম কিন্তু অনেক কম। সবাই সহজেই কিনতে পারে।
একজন কৃষি কর্মকর্তা জানান, গত কয়েক বছর থেকেই এই মাল্টা রংপুরের পীরগঞ্জ, বদরগঞ্জসহ অনেক এলাকায় প্রচুর পরিমাণে চাষ হচ্ছে। বাড়ির পাশে, পরিত্যক্ত জায়গা ও আবাদি জমিতে সহজেই এই মাল্টা চাষ করা যায়। অন্য ফলের চেয়ে চাষ করতে খরচ অনেক কম। একটি গাছে প্রচুর পরিমাণে মাল্টা হওয়ায় দামও ভালো পাওয়া যায়। তাই দিনে দিনে এই মাল্টা রংপুরে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
রমেক হাসপাতালের হেপাটলজি বিভাগের একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জানান, খনিজের পাশাপাশি শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন, মিনারেল ও আয়রনের চাহিদা পূরণের অন্যতম উৎস ফল। দেশি জাতের এই মাল্টায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। দামও বিদেশি মাল্টার চেয়ে অনেক কম। তাই বিদেশি ফলের উপর নির্ভনশীল না হয়ে, প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় দেশীয় ফল রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন এই বিশেষজ্ঞ।