1:41 pm, Thursday, 21 November 2024

আইন নিজের হাতে নিলে শাস্তি পেতে হবে: ইউনূস

  • Reporter Name
  • Update Time : 06:55:18 am, Thursday, 12 September 2024
  • 17 Time View

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গতকাল সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন-পিআইডি

গণতান্ত্রিক দেশের রূপরেখা বাস্তবায়নে আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদ্ষ্টো সবাইকে সতর্ক করে বলেছেন, কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে তাকে শাস্তি পেতে হবে। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় দায়িত্ব নেওয়ার এক মাস তিন দিন পর জাতির উদ্দেশে ভাষণে তিনি বলেন, “কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে কেউ সমাজে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করলে আমরা তাকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় নিয়ে আসব।” তার এই ভাষণ রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যমে একযোগে প্রচার করা হয়। বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ হিসেবে তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট হয় এমন কোনো কাজ কেউ কোনোভাবেই করবেন না।” স্বৈরাচার মুক্ত দেশ গড়তে এবং গণতান্ত্রিক দেশের জন্য তিনি আইন মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আপনাদের আমাদের সন্তানদের জন্য একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রূপরেখা তৈরি করতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। ”আর যেন আমাদের কোন স্বৈরাচারের হাতে পড়তে না হয়, আমরা যাতে বলতে পারি আমরা একটি গণতান্ত্রিক দেশে বসবাস করি, আমরা যাতে সকলেই দাবি করতে পারি যে এই দেশটি আমাদের – আমরা সেই লক্ষ্যেই কাজ করছি।” ৩৩ মিনিটের ভাষণে মুহাম্মদ ইউনূস একই সঙ্গে সব অন্যায়ের প্রতিকারের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। বলেছেন, “আমরা আমাদের দায়িত্বকালে যথাসম্ভব সব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব।” তিনি বলেন, “আমাদের সরকারের প্রথম মাস কাটল। দ্বিতীয় মাস থেকে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়ার ভিত্তি হিসেবে নতুন শ্রমিক-মালিক সম্পর্কের সূচনা করতে চাই। এটা দেশের সবার কাম্য। দেশের নতুন প্রজন্ম নির্ভয়ে যেন তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে এগিয়ে যেতে পারে আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করছি।“ তৈরি পোশাক ও ওষুধ শিল্পে দাবি দাওয়া নিয়ে অসন্তোষের জের ধরে কারখানা বন্ধ রাখতে বাধ্য করার কথা তুলে ধরে তিনি শ্রমিক ও মালিক উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে শ্রমিকদের সমস্যার স্থায়ী সমাধান করার কথা বলেন। শ্রমিকদের কারখানা চালু রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, “মালিক-শ্রমিক উভয় পক্ষের সঙ্গে আলাপ করে এসব সমস্যার সমাধান আমরা অবশ্যই বের করব। আপনারা কারখানা খোলা রাখুন। অর্থনীতির চাকা সচল রাখুন। দেশের অর্থনীতিকে সোজা হয়ে দাঁড়াতে দিন। আমরা আপনাদের সমস্যার স্থায়ী সমাধান বের করার জন্য সর্বশক্তি প্রয়োগ করব।” দায়িত্ব নেওয়ার এক মাসের মাথায় তৃতীয় দফায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছেন অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। সরকার পতনের তিন দিন পর ৮ আগস্ট মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্র্বতী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ বঙ্গভবনে শপথ গ্রহণ করেন। সেদিনেই জাতির উদ্দেশে প্রথম ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস। এর ১৭ দিন পর জাতির উদ্দেশে দ্বিতীয় দফায় ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা। দায়িত্ব নেওয়ার পর দুই সপ্তাহ না যেতেই দেশের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে নজিরবিহীন বন্যার ধাক্কা সামলাতে হয় অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে। তার মধ্যেই ২৫ অগাস্ট দ্বিতীয় দফা ভাষণ দেন তিনি।১

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

মমতাজ শিরীন ভরসার শোক প্রকাশ

আইন নিজের হাতে নিলে শাস্তি পেতে হবে: ইউনূস

Update Time : 06:55:18 am, Thursday, 12 September 2024

গণতান্ত্রিক দেশের রূপরেখা বাস্তবায়নে আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদ্ষ্টো সবাইকে সতর্ক করে বলেছেন, কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে তাকে শাস্তি পেতে হবে। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় দায়িত্ব নেওয়ার এক মাস তিন দিন পর জাতির উদ্দেশে ভাষণে তিনি বলেন, “কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে কেউ সমাজে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করলে আমরা তাকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় নিয়ে আসব।” তার এই ভাষণ রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যমে একযোগে প্রচার করা হয়। বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ হিসেবে তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট হয় এমন কোনো কাজ কেউ কোনোভাবেই করবেন না।” স্বৈরাচার মুক্ত দেশ গড়তে এবং গণতান্ত্রিক দেশের জন্য তিনি আইন মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আপনাদের আমাদের সন্তানদের জন্য একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রূপরেখা তৈরি করতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। ”আর যেন আমাদের কোন স্বৈরাচারের হাতে পড়তে না হয়, আমরা যাতে বলতে পারি আমরা একটি গণতান্ত্রিক দেশে বসবাস করি, আমরা যাতে সকলেই দাবি করতে পারি যে এই দেশটি আমাদের – আমরা সেই লক্ষ্যেই কাজ করছি।” ৩৩ মিনিটের ভাষণে মুহাম্মদ ইউনূস একই সঙ্গে সব অন্যায়ের প্রতিকারের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। বলেছেন, “আমরা আমাদের দায়িত্বকালে যথাসম্ভব সব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব।” তিনি বলেন, “আমাদের সরকারের প্রথম মাস কাটল। দ্বিতীয় মাস থেকে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়ার ভিত্তি হিসেবে নতুন শ্রমিক-মালিক সম্পর্কের সূচনা করতে চাই। এটা দেশের সবার কাম্য। দেশের নতুন প্রজন্ম নির্ভয়ে যেন তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে এগিয়ে যেতে পারে আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করছি।“ তৈরি পোশাক ও ওষুধ শিল্পে দাবি দাওয়া নিয়ে অসন্তোষের জের ধরে কারখানা বন্ধ রাখতে বাধ্য করার কথা তুলে ধরে তিনি শ্রমিক ও মালিক উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে শ্রমিকদের সমস্যার স্থায়ী সমাধান করার কথা বলেন। শ্রমিকদের কারখানা চালু রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, “মালিক-শ্রমিক উভয় পক্ষের সঙ্গে আলাপ করে এসব সমস্যার সমাধান আমরা অবশ্যই বের করব। আপনারা কারখানা খোলা রাখুন। অর্থনীতির চাকা সচল রাখুন। দেশের অর্থনীতিকে সোজা হয়ে দাঁড়াতে দিন। আমরা আপনাদের সমস্যার স্থায়ী সমাধান বের করার জন্য সর্বশক্তি প্রয়োগ করব।” দায়িত্ব নেওয়ার এক মাসের মাথায় তৃতীয় দফায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছেন অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। সরকার পতনের তিন দিন পর ৮ আগস্ট মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্র্বতী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ বঙ্গভবনে শপথ গ্রহণ করেন। সেদিনেই জাতির উদ্দেশে প্রথম ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস। এর ১৭ দিন পর জাতির উদ্দেশে দ্বিতীয় দফায় ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা। দায়িত্ব নেওয়ার পর দুই সপ্তাহ না যেতেই দেশের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে নজিরবিহীন বন্যার ধাক্কা সামলাতে হয় অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে। তার মধ্যেই ২৫ অগাস্ট দ্বিতীয় দফা ভাষণ দেন তিনি।১