6:39 pm, Thursday, 21 November 2024

ভারতের মণিপুরে আবার সহিংসতা, নিহত ৬

  • Reporter Name
  • Update Time : 07:14:28 am, Sunday, 8 September 2024
  • 6 Time View

আন্তর্জাতিক : ভারতের মণিপুর রাজ্যের জিরিবাম জেলায় নতুন করে সহিংসতায় ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

সন্দেহভাজন কুকি বিদ্রোহীরা রাজ্যের রাজধানী ইম্ফল থেকে ২২৯ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে জেলাটির নুংচাপ্পি গ্রামে হামলা চালায়। এখানে তারা ইউরেমবাম কুলেন্দ্র সিংহ (৬৩) নামের এক ব্যক্তিকে হত্যা করে। মণিপুরের উপত্যাকাগুলিতে আধিপত্য বিস্তার করে থাকা মেইতেই সম্প্রদায়ের সশস্ত্র সদস্যদের সঙ্গে পাহাড়ি কুকি বিদ্রোহীদের বন্দুক লড়াইয়ে আরও পাঁচজন নিহত হন।

এসব গোষ্ঠীগুলো নিজেদের ‘গ্রাম প্রতিরক্ষা স্বেচ্ছাসেবক’ বলে দাবি করে, জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি।

এ ঘটনার একদিন আগে মণিপুরের মইরাং শহরে কুকি বিদ্রোহীদের রকেট হামলায় মেইতেই সম্প্রদায়ের এক বৃদ্ধ নিহত হন বলে পুলিশ জানিয়েছে। এ ঘটনায় আরও ছয়জন আহত হন। এক বিবৃতিতে পুলিশ জানায়, জিরিবামের পুলিশ সুপার (এসপি) এবং পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে তাদের লক্ষ্য করেও গুলি চালানো হয়। এ সময় পুলিশের ‘শক্ত জবাবে গোলাগুলি কমে আসে’। ইম্ফল থেকে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার মহাপরিদর্শক কে কাবিব সাংবাদিককে জানান, শুক্রবার কুকি বিদ্রোহীরা বিষ্ণুপুর ও চূড়াচাঁদপুর সীমান্তের কিছু প্রান্তিক এলাকায় হামলা চালায় ও গুলিবর্ষণ করে। এরপর নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর যৌথ দল ওই এলাকায় চিরুনি অভিযান চালায়। তারা বিদ্রোহীদের বেশ কয়েকটি বাঙ্কার ধ্বংস করেছে। এরপরই মইরাং শহরে রকেট হামলা চালায় কুকি বিদ্রোহীরা। যে হামলায় একজন নিহত হন। পুলিশ জানায়, এক সপ্তাহ আগে কুকি বিদ্রোহীরা ইম্ফলের পশ্চিম জেলার কয়েকটি গ্রামে অস্ত্রসজ্জিত ড্রোন যোগে হামলা চালিয়েছিল। এই প্রথম ভারতের মাটিতে কোনো সন্দেহভাজন বিদ্রোহী গোষ্ঠী হামলা চালাতে ড্রোন ব্যবহার করেছে। এ ধরনের হামলা প্রতিরোধ করতে ড্রোন বিধ্বংসী ব্যবস্থা মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে সেখানে ভারতীয় সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার টহল দিচ্ছে। পাহাড়েও চলছে চিরুনি তল্লাশি। এমনকি উস্কানিদাতাদের ধরতে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের উপরও নজর রাখছে নিরাপত্তা বাহিনীর একটি দল। পুলিশ আরও জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজ্যের ইম্ফলের ২য় এবং ৭ম মণিপুর রাইফেলস ক্যাম্প থেকে অস্ত্র লুট করার চেষ্টা করেছিল উত্তেজিত মেইতেইরা, কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনীর বাধা দিতে ফাঁকা গুলি ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে। ফলে তারা অস্ত্র লুট করতে ব্যর্থ হয়। উত্তেজিত জনতার মধ্যে থাকা লোকজনের গুলিতে দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ইম্ফল উপত্যকার বিক্ষোভকারীরা সাংবাদিকদের বলেছেন, ড্রোন ও রকেট হামলার ঘটনায় তারা রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের উপর হতাশ, তাই বেসামরিক নাগরিকদের নিজেদের আত্মরক্ষা করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

মমতাজ শিরীন ভরসার শোক প্রকাশ

ভারতের মণিপুরে আবার সহিংসতা, নিহত ৬

Update Time : 07:14:28 am, Sunday, 8 September 2024

আন্তর্জাতিক : ভারতের মণিপুর রাজ্যের জিরিবাম জেলায় নতুন করে সহিংসতায় ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

সন্দেহভাজন কুকি বিদ্রোহীরা রাজ্যের রাজধানী ইম্ফল থেকে ২২৯ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে জেলাটির নুংচাপ্পি গ্রামে হামলা চালায়। এখানে তারা ইউরেমবাম কুলেন্দ্র সিংহ (৬৩) নামের এক ব্যক্তিকে হত্যা করে। মণিপুরের উপত্যাকাগুলিতে আধিপত্য বিস্তার করে থাকা মেইতেই সম্প্রদায়ের সশস্ত্র সদস্যদের সঙ্গে পাহাড়ি কুকি বিদ্রোহীদের বন্দুক লড়াইয়ে আরও পাঁচজন নিহত হন।

এসব গোষ্ঠীগুলো নিজেদের ‘গ্রাম প্রতিরক্ষা স্বেচ্ছাসেবক’ বলে দাবি করে, জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি।

এ ঘটনার একদিন আগে মণিপুরের মইরাং শহরে কুকি বিদ্রোহীদের রকেট হামলায় মেইতেই সম্প্রদায়ের এক বৃদ্ধ নিহত হন বলে পুলিশ জানিয়েছে। এ ঘটনায় আরও ছয়জন আহত হন। এক বিবৃতিতে পুলিশ জানায়, জিরিবামের পুলিশ সুপার (এসপি) এবং পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে তাদের লক্ষ্য করেও গুলি চালানো হয়। এ সময় পুলিশের ‘শক্ত জবাবে গোলাগুলি কমে আসে’। ইম্ফল থেকে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার মহাপরিদর্শক কে কাবিব সাংবাদিককে জানান, শুক্রবার কুকি বিদ্রোহীরা বিষ্ণুপুর ও চূড়াচাঁদপুর সীমান্তের কিছু প্রান্তিক এলাকায় হামলা চালায় ও গুলিবর্ষণ করে। এরপর নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর যৌথ দল ওই এলাকায় চিরুনি অভিযান চালায়। তারা বিদ্রোহীদের বেশ কয়েকটি বাঙ্কার ধ্বংস করেছে। এরপরই মইরাং শহরে রকেট হামলা চালায় কুকি বিদ্রোহীরা। যে হামলায় একজন নিহত হন। পুলিশ জানায়, এক সপ্তাহ আগে কুকি বিদ্রোহীরা ইম্ফলের পশ্চিম জেলার কয়েকটি গ্রামে অস্ত্রসজ্জিত ড্রোন যোগে হামলা চালিয়েছিল। এই প্রথম ভারতের মাটিতে কোনো সন্দেহভাজন বিদ্রোহী গোষ্ঠী হামলা চালাতে ড্রোন ব্যবহার করেছে। এ ধরনের হামলা প্রতিরোধ করতে ড্রোন বিধ্বংসী ব্যবস্থা মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে সেখানে ভারতীয় সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার টহল দিচ্ছে। পাহাড়েও চলছে চিরুনি তল্লাশি। এমনকি উস্কানিদাতাদের ধরতে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের উপরও নজর রাখছে নিরাপত্তা বাহিনীর একটি দল। পুলিশ আরও জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজ্যের ইম্ফলের ২য় এবং ৭ম মণিপুর রাইফেলস ক্যাম্প থেকে অস্ত্র লুট করার চেষ্টা করেছিল উত্তেজিত মেইতেইরা, কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনীর বাধা দিতে ফাঁকা গুলি ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে। ফলে তারা অস্ত্র লুট করতে ব্যর্থ হয়। উত্তেজিত জনতার মধ্যে থাকা লোকজনের গুলিতে দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ইম্ফল উপত্যকার বিক্ষোভকারীরা সাংবাদিকদের বলেছেন, ড্রোন ও রকেট হামলার ঘটনায় তারা রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের উপর হতাশ, তাই বেসামরিক নাগরিকদের নিজেদের আত্মরক্ষা করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই।