6:26 pm, Thursday, 21 November 2024

রংপুরে ভেজাল সুগন্ধি চালে বাজার সয়লাব

  • Reporter Name
  • Update Time : 06:14:10 pm, Saturday, 7 September 2024
  • 19 Time View

oppo_0

স্টাফ রিপোর্টার

কৃত্তিম ফ্লেভার মেশানো ভেজাল সুগন্ধি আতপচালে রংপুর নগরীসহ আশেপাশের হাটবাজার সয়লাব হয়ে গেছে। উন্নতমানের চিনিগুঁড়া (কালোজিরা/গোবিন্দভোগ নামেও পরিচিত) চালের দাম বেশি থাকায় একশ্রেণির অসৎ ব্যবসায়ী অতিমুনাফা অর্জনের জন্য ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত ৯০ জাতের ধানের আতপচালে কেমিকেলযুক্ত ফ্লেভার  মিশিয়ে বাজারজাত করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সাধারণ ক্রেতারা পোলাউ-বিরিয়ানী-পায়েস রান্নার জন্য এ চাল বাড়ি নিয়ে ধোয়ার পর আর সুগন্ধি থাকছে না। এতে ক্রেতারা প্রতারিত হওয়ার পাশাপাশি কেমিকেলযুক্ত খাবারে স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্ভবনা রয়েছে। এখন রংপুর নগরীর বিভিন্ন হাট-বাজারের পাশাপাশি পাড়া-মহল্লা ও গ্রামে-গ্রামে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় মাইকিং করে সুগন্ধি আতবচালের নামে ফ্লেভার মেশানো চাল ৭৫-৮০ টাকা কেজি দরে ফেরী করে বিক্রি হচ্ছে।

কৃষক, চাল ব্যবসায়ী, চালকল মিলার ও কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অনেক আগে ভারতের মহারাষ্ট্র হতে এ ধরণের চাল আমদানি হতো। বছর পাঁচেক আগে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের কৃষি বিজ্ঞানীরা ছোট ও চিকন ৯০ জাতের ধান উদ্ভাবন করেন। এ ধানের ফলনও বেশি এবং পোকামাকড়ের আক্রমণ হয় না। এতে কিছুটা সুগন্ধিও রয়েছে। চিকন মিনিকেট ও নাজিরশাইল চালের বিকল্প হিসেবে প্রথম দিকের ব্যাপক চাহিদা ছিলো। ইরি-বোরো মৌসুমে চলনবিল ও যশোর অঞ্চলে বিপুল পরিমাণ এজাতের ধানের আবাদ হয়। তবে এখন আমন মৌসুমে কিছু কিছু আবাদ হচ্ছে।

মিলাররা জানান, বোরো মৌসুমের ধান দিয়ে চাল করার সময় চাল ফেটে যাওয়ায় অনেক লোকসান হয়। যে কারণে মিলাররা এ ধান এখন কিনতে চায় না। ফলে ৯০ জাতের ধানের দাম অনেক নেমে গেছে। তবে আমন মৌসুমের চাল তেমন একটা ফাটে না। রংপুরের  বিভিন্ন হাটে বর্তমানে ১ হাজার দুইশত টাকা মণ দরে ৯০ জাতের ধান বিক্রি হচ্ছে।

 নব্দীগঞ্জের চাতাল মালিক বজলুল হুদা জানান, দেশীয় বিআর ৩৪ জাতের ধান দিয়ে তৈরি হয় উন্নতমানের আসল চিনিগুঁড়া বা কালোজিরা চাল। পাইকারিতে ৫০ কেজির বস্তার দাম ৬ হাজার পাঁচশত টাকা । আর খুচরা বাজারে এক কেজির দাম ১৪০-১৫০ টাকা। ভারত ও জার্মানির অ্যারোমেটিক সেন্ট তরল অথবা পাউডার ফর্মে ৯০ জাতের চালে মেশানো হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন মোকামে সুগন্ধি মেশানো ৫০ কেজি চালের দাম ৩,০০০-৩,৫০০ টাকা। অর্থাৎ এক কেজির দাম ৬০-৭০ টাকা।  একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী কমদামের চালে সুগন্ধি মিশিয়ে বাজারে বেশি দামে বিক্রি করছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

মমতাজ শিরীন ভরসার শোক প্রকাশ

রংপুরে ভেজাল সুগন্ধি চালে বাজার সয়লাব

Update Time : 06:14:10 pm, Saturday, 7 September 2024

স্টাফ রিপোর্টার

কৃত্তিম ফ্লেভার মেশানো ভেজাল সুগন্ধি আতপচালে রংপুর নগরীসহ আশেপাশের হাটবাজার সয়লাব হয়ে গেছে। উন্নতমানের চিনিগুঁড়া (কালোজিরা/গোবিন্দভোগ নামেও পরিচিত) চালের দাম বেশি থাকায় একশ্রেণির অসৎ ব্যবসায়ী অতিমুনাফা অর্জনের জন্য ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত ৯০ জাতের ধানের আতপচালে কেমিকেলযুক্ত ফ্লেভার  মিশিয়ে বাজারজাত করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সাধারণ ক্রেতারা পোলাউ-বিরিয়ানী-পায়েস রান্নার জন্য এ চাল বাড়ি নিয়ে ধোয়ার পর আর সুগন্ধি থাকছে না। এতে ক্রেতারা প্রতারিত হওয়ার পাশাপাশি কেমিকেলযুক্ত খাবারে স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্ভবনা রয়েছে। এখন রংপুর নগরীর বিভিন্ন হাট-বাজারের পাশাপাশি পাড়া-মহল্লা ও গ্রামে-গ্রামে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় মাইকিং করে সুগন্ধি আতবচালের নামে ফ্লেভার মেশানো চাল ৭৫-৮০ টাকা কেজি দরে ফেরী করে বিক্রি হচ্ছে।

কৃষক, চাল ব্যবসায়ী, চালকল মিলার ও কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অনেক আগে ভারতের মহারাষ্ট্র হতে এ ধরণের চাল আমদানি হতো। বছর পাঁচেক আগে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের কৃষি বিজ্ঞানীরা ছোট ও চিকন ৯০ জাতের ধান উদ্ভাবন করেন। এ ধানের ফলনও বেশি এবং পোকামাকড়ের আক্রমণ হয় না। এতে কিছুটা সুগন্ধিও রয়েছে। চিকন মিনিকেট ও নাজিরশাইল চালের বিকল্প হিসেবে প্রথম দিকের ব্যাপক চাহিদা ছিলো। ইরি-বোরো মৌসুমে চলনবিল ও যশোর অঞ্চলে বিপুল পরিমাণ এজাতের ধানের আবাদ হয়। তবে এখন আমন মৌসুমে কিছু কিছু আবাদ হচ্ছে।

মিলাররা জানান, বোরো মৌসুমের ধান দিয়ে চাল করার সময় চাল ফেটে যাওয়ায় অনেক লোকসান হয়। যে কারণে মিলাররা এ ধান এখন কিনতে চায় না। ফলে ৯০ জাতের ধানের দাম অনেক নেমে গেছে। তবে আমন মৌসুমের চাল তেমন একটা ফাটে না। রংপুরের  বিভিন্ন হাটে বর্তমানে ১ হাজার দুইশত টাকা মণ দরে ৯০ জাতের ধান বিক্রি হচ্ছে।

 নব্দীগঞ্জের চাতাল মালিক বজলুল হুদা জানান, দেশীয় বিআর ৩৪ জাতের ধান দিয়ে তৈরি হয় উন্নতমানের আসল চিনিগুঁড়া বা কালোজিরা চাল। পাইকারিতে ৫০ কেজির বস্তার দাম ৬ হাজার পাঁচশত টাকা । আর খুচরা বাজারে এক কেজির দাম ১৪০-১৫০ টাকা। ভারত ও জার্মানির অ্যারোমেটিক সেন্ট তরল অথবা পাউডার ফর্মে ৯০ জাতের চালে মেশানো হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন মোকামে সুগন্ধি মেশানো ৫০ কেজি চালের দাম ৩,০০০-৩,৫০০ টাকা। অর্থাৎ এক কেজির দাম ৬০-৭০ টাকা।  একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী কমদামের চালে সুগন্ধি মিশিয়ে বাজারে বেশি দামে বিক্রি করছে।